বগুড়ার নন্দীগ্রামে টানা বৃষ্টিতে এই উপজেলার প্রায় ১৪০ হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় জমিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এতে ফসল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক কৃষক এখনো জমিতে নতুন করে ধান রোপণ করতে পারছেন না। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা। নন্দীগ্রাম উপজেলার ৪নং থালতা মাজগ্রাম ইউনিয়নেই প্রায় ৭০হেক্টর জমি পানির নিচে রয়েছে। ১০ থেকে ১২ হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপন করলেও এখন তা সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ওই ইউনিয়নের গোপালপুর, জামালপুর, গুলিয়া, তৈয়বপুর সহ বেশ কয়েকটি এলাকার সবজি ক্ষেত, ধানের বীজতলা ও সদ্য রোপণ করা আমন ধান ডুবে গেছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টির কারণে উপজেলায় প্রায় ১৪০ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। জানা যায়, উপজেলার ৪নং খালতা মাজগ্রাম ইউনিয়ন, ৩নং ভাটরা ইউনিয়ন, ২নং সদর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের জমিতে এখনো পানি জমে থাকায় নতুন করে ধান রোপণ করতেও পারছেন না কৃষকরা। ৪নং থালতা মাজগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক আরাফাত জানান, টানা বৃষ্টিতে আমার দুই বিঘা জমির ধান পানিতে ডুবে আছে। আর এক বিঘা জমিতে শাক সবজি আবাদ করছিলাম। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে সব তলিয়ে গেছে।
একই ইউনিয়নের কৃষক মাসুদ রানা জানান, আমি দশ বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছিলাম এবং কিছু জমিতে শাক সবজির আবাদ ছিল। টানা বৃষ্টির কারণে সব পানির নিচে তলিয়ে আছে। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছগুলো মরে যাবে। আমি এ ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে উঠব বুঝতে পারছি না। ভাটরা ইউনিয়নের কৃষক আরিফুল ইসলাম জানান, আমার ৫বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। পানি কবে নামবে জানি না। পানি নেমে গেলে আবারও ধানের চারা রোপণ করতে হবে। কিন্তু এখন চারা পাব কোথায়। সদর ইউনিয়নের কৃষক নুরনবী জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে, আমার চার বিঘা পত্তনি জমির ধান পানির নিচেই তলিয়ে গেছে। আবারও নতুন করে ধানের চারা রোপণ করতে হবে। কিন্তু ধানের চারা পাব কোথায়। ধান লাগাতে না পারলে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়বো।
নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজিউল হক বলেন, কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি অপসারণের জন্য কৃষকদের আইল কেটে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং নতুন করে বীজ তলা ফেলানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নিচু এলাকায় নদীতে পানি বেশি থাকায় জমির পানি কমছে না তবে নদীর পানি শুকিয়ে গেলে জমির পানি কমতে শুরু করবে আমরা কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে গিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছি।
