জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নূর আফরোজ বেগম জ্যোতির ৭ বছরের কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার রায় দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় বগুড়ার স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এমরান হোসেন চৌধুরী এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত আসামী বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নূর আফরোজ বেগম জ্যোতিকে কারাগারে নেওয়া হয়।
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নূর আফরোজ বেগম জ্যোতি বগুড়া শহরের কাটনারপাড়ার প্রফেসর আব্দুর রউফ এর স্ত্রী। ছাত্র জীবন থেকে নূর আফরোজ বেগম জ্যোতি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
বগুড়া জেলা মহিলা দলের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। পরে নূর আফরোজ বেগম জ্যোতি জাতীয়াতাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য ছিলেন।
নূর আফরোজ বেগম জ্যোতি ২০১৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়ায় স্থাবর-অস্থাবর ও দায় দেনার ১৯৯৯ থেকে ২০১৪ সালের হিসাব বিবরনী দাখিল করেন। দাখিলকৃত সম্পদ বিবরনীতে ২৮ লাখ ১৭ হাজার ১৮৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন। তিনি অসাধু উপায়ে অর্জিত ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ন ৫৩ লাখ ২২হাজার ৭৯০ টাকা সমমূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন করে তার নিজ দখলে রেখে ভোগ দখল করে আসছেন মর্মে দুদক তথ্য পায়।
এ ঘটনায় গত ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর বগুড়া সদর থানায় তৎকালিন দুদক জেলা কার্যালয়ের এডি মোঃ ফারুক হোসেন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন এবং তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বগুড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী এসএম আবুল কালাম আজাদ জানান, দুর্নীতির অভিযোগে নূর আফরোজ বেগমের বিরুদ্ধে ৫৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা অবৈধ সম্পর্দ অর্জনের তথ্য পায় দুদক। একই সঙ্গে নূর আফরোজ বেগম জ্যোতি ২৮ লাখ টাকা তথ্য গোপন করেছিলেন। এই বিষয়টি অনুসন্ধানে পেয়ে দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার বিচারকাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। এরপর চলতি বছরের ১১ মে যুক্তিতর্ক শুনানি ছিল।
তিনি আরও বলেন, ওই সময় নূর আফরোজ বেগম জ্যোতির আইনজীবী সময় প্রার্থনা করেন। কিন্তু আদালত সময় আবদেন নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৯ মে তারিখ ধার্য্য করেন। ধার্য্য তারিখ মতে ১৯ মে বৃহস্পতিবার মামলার রায়ে ৭ বছরের কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তার নামে থাকা সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়।
