সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫ ৮:১১ পিএম

ধুনটে ১ যুগ পর ছাত্রদলের নেতৃত্বে আলোচনায় যারা

বগুড়ার ধুনটে ১ যুগ পর গঠিত হতে যাচ্ছে ছাত্রদলের কমিটি। দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় কার্যত নেতৃত্বশূন্য রয়েছে সংগঠনটি। তবে কমিটি গঠন নিয়ে এমন কালক্ষেপণে হতাশ হওয়া ছাত্র নেতাদের মনের মেঘ কেটে যাবে খুব শীঘ্রই। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার প্রহর শেষে খুব সহসায় ঘোষণা আসছে উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের কমিটি। এখন শুধু দেখার বিষয় কারা আসছেন নেতৃত্বে? উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের নতুন কমিটিকে কেন্দ্র করে আলোচনা সমাালোচনায় রয়েছেন অনেকে। কমিটি ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা যেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তেমনই দৃশ্যমান হচ্ছে নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক, চা-চক্র, শোডাউনসহ বিভিন্ন আয়োজন। সংগঠনের শীর্ষ দুই পদের জন্য থেমে নেই ঊর্ধ্বতন মহলে তদবির তৎপরতা। নিজ নিজ অবস্থান থেকে যোগ্য ব্যাক্তি দাবী করছেন পদপ্রত্যাশীরা।

জানা গেছে, ২০১১ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে ধুনট উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের সর্বশেষ কমিটি গঠন করা  হয়। ওই কমিটিতে উপজেলা শাখায় মোহাম্মদ আলী জনকে সভাপতি ও আবু তালহা শামীমকে সাধারণ সম্পাদক এবং পৌর শাখায় আব্দুল মান্নান পাখিকে সভাপতি ও নিয়ামুল আলম তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক করে দুটি শাখায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন জেলা ছাত্রদল। ওই দুই ইউনিট কমিটির মেয়াদ দীর্ঘ ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও হইনি পূর্নাঙ্গ কমিটি। ২০১৮ সালে আবু হাসান ও নুরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান জেলা ছাত্রদলের দায়িত্বে থাকাকালিন উপজেলা ও পৌর কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। এরপর পেরিয়ে গেছে আরও ৭টি বছর। তবে ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতাদের উপস্থিতিতে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও অজানা কারণে সেই কমিটিও আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৮ সাল থেকেই ধুনট উপজেলা ও পৌর ছাত্রদল স্থানীয় নেতৃত্বহীনতায় সংগঠন পরিচালনা করে আসছে। যার ফলে ধুনটে রাজনৈতিক মাঠে সাংগঠনিক কার্যক্রমে নেমে আসে স্থবিরতা। দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় নেতাকর্মীদের মাঝে বহুদিন ধরেই হতাশা বিরাজ করছে। উপজেলায় সাবেক এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি একে,এম তৌহিদুল আলম মামুন এই দুটি নামের উপর বিভক্ত হয়েছে উপজেলা বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় যুবদল ও ছাত্রদলেও দেখা দিয়েছে বিভক্তি। উপজেলা জুড়ে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে অচিরেই হতে যাচ্ছে উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের নতুন কমিটি। যেকোন সময় আসতে পারে ঘোষনা। কমিটি ঘোষনাকে কেন্দ্র যখন এমন পরিস্থিতি, তখন নতুন কমিটিতে শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন অনেকেই। নতুন কমিটির উপজেলা শাখায় ছাত্রদল নেতা আলম হাসান, রকিবুল হাসান রকি, মিশুক বাবু তালুকদার সম্রাট, জিন্নাহুর রহমান রাকিব, আশিকুল কবির স্বরণ তালুকদার, বদিউজ্জামান তমাল,  রবিউল ইসলাম রতন, একে মিনু, জিয়াউর রহমান জিয়া, আল মামুন এবং পৌর শাখায় শাহাদাৎ হোসেন, জুয়েল রানা, আমিনুল ইসলাম মিশন, শেখ মোঃ জাকারিয়া সহ অনেকে স্ব স্ব অবস্থানে যোগ্য দাবীতে অনড়। এছাড়াও পারভেজ হোসেন, জিসানুল হক তনয়, জাকারিয়া আলোচনায় রয়েছেন।

ছাত্রদলের একটি সূত্র জানায়, ছাত্রদলের নতুন কমিটি কেমন হবে সেটি নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গঠিত হতে যাওয়া ছাত্রদলের কমিটির শীর্ষ দুই পদে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দীর্ঘ দিনের পরীক্ষিত ছাত্রদল নেতারা। এবারের ছাত্রদলের কমিটিতে হামলা-মামলার শিকার নির্যাতিত নেতাকর্মীদের দিয়ে কমিটি ঘোষনা করা হবে। সেক্ষেত্রে দলীয় প্রোগ্রামসহ রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রাখা ত্যাগী, পরিশ্রমী, নির্ভীক, পরিচ্ছন্ন ছাত্রদল নেতাদের হাতে দেওয়া হবে দায়িত্ব।

স্থানীয় নেতাকর্মী ও জেলার দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলে এক ডজনের অধিক পদপ্রত্যাশী কমিটিতে আসতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।  ইতিমধ্যে পদপ্রত্যাশী ছাত্রদল নেতাদের থেকে জীবন বৃত্তান্ত চাওয়া হয়েছে। কেউ কেউ জেলা নেতৃত্বের হাতে জমাও দিয়েছেন। তবে কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে পদপ্রত্যাশী অনেকে নিয়মিত ছাত্র নন। অনেকের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে অনেক আগেই। কেউ সম্প্রতি পড়াশোনা শেষ করেছেন। তাদের দাবি নিয়মিত অনার্স-মাস্টার্সে অধ্যয়নরতদের শীর্ষপদে দেখতে চান।

স্থানীয় শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ সুশীল সমাজের অনেকে মনে করেন দীর্ঘদিন পর ঘোষিত কমিটিতে যেন কোন ত্রুটি না থাকে। যা আগামীতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে।  এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন চলমান রয়েছে, মাদকসহ কোন চারিত্রিক বা সামাজিক কেলেঙ্কারী নেই এমন গ্রহন যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যাক্তিকেই কমিটিতে স্থান দেওয়া উচিত বলে মনে করেন সাবেক ছাত্রনেতারা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print