নওগাঁয় সাংবাদিক শহিদুল ইসলামের (২৫) উপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে সদর মডেল থানায় বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক। হামলার খবর পেয়ে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে পলাশ (২৭) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলার চাকলা বাজার এলাকায় নাহিদ ও পলাশের নেতৃত্বে সাংবাদিক শহিদুল ইসলামের ওপর দ্বিতীয় দফায় সংঘবদ্ধ হামলা চালানো হয়।
হামলার শিকার সাংবাদিক শহিদুল উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের রাজ্জাক হোসেনের ছেলে এবং মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম-এর নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি।
আর নাহিদ একই গ্রামের গোলামের ছেলে ও তার সহযোগি আটক পলাশও একই গ্রামের উকিল মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য বলে অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে গত ১৬ অক্টোবর দুপুরে পার্শ্ববর্তী গোবিন্দপুর গ্রামে এক নব মুসলিম পরিবারকে অবরুদ্ধ রাখা সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে গেলে প্রথম দফায় হামলার শিকার হয়েছিলেন তিনি। পরে হামলাকারীদের অপকর্ম তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। এর জেরেই দ্বিতীয় দফায় তার ওপর আবারো সংঘবদ্ধ হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে আহত অবস্থায় শহিদুলকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার (২৩ অক্টোবর) নিজ বাড়ি ফিরেছেন সাংবাদিক শহিদুল। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরেই দ্বিতীয় দফায় এ সংঘবদ্ধ হামলা চালানো হয়েছে।
হামলার শিকার সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১৬ অক্টোবর প্রথম দফা হামলার শিকার হয়ে নাহিদসহ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দিয়েছিলাম। এরপরই হামলাকারীরা আত্মগোপনে চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিলো আত্মগোপনে থাকা নাহিদ বাহিনীর সদস্যরা। এরই জেরে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে চাকলা বাজারে চারিদিক থেকে আমাকে ঘেরাও করে নাহিদ ও তার সঙ্গে থাকা ক্যাডার বাহিনীর ১৫-২০ সদস্য। এরপরই পকেট থেকে ছুরিসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র বের করে আক্রমন চালায় তারা। নাহিদ মূলত অন-লাইনে জুয়ার এজেন্ট দেয় ও অবৈধভাবে ডলার লেনদেন করে যুবসমাজকে ধ্বংস করছে প্রতিনিয়ত। নাহিদ সহ তার অন্যান্য বাহিনীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে নাহিদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, গত ১৬ অক্টোবর থানা পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে সাংবাদিক শহিদুলকে কির্ত্তীপুর থেকে উদ্ধার করে আনা হয়েছিলো। এরপর থেকেই হামলার ঘটনাটি খতিয়ে দেখছিলো পুলিশ। এরই মধ্যে দ্বিতীয় দফায় আবারো তিনি হামলার শিকার হন। ঘটনাটি জানার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে হামলাকারীদের একজনকে আটক করা হয়েছিলো। পরে বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বাকীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
