বগুড়া: অভিনব কায়দায় মোবাইল ছিনতাই ও চুরি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া জেলা পুলিশ। এই চক্রটি অনলাইন খাবার প্রতিষ্ঠান ফুডপান্ডার গ্রাহক সেজে বিভিন্ন মানুষের কাছে থেকে দামী স্মার্টফোনগুলো ছিনিয়ে নেন।
সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে বারোটায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য গণমাধ্যমে জানিয়েছেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
গ্রেফতারকৃত চক্রের মূলহোতা নূর কবির শাকিল (২৪)। পিতা- মোঃ মোখলেছুর রহমান। তার দু’জন সহকারী মো: স্বাধীন (২০), পিতা- বিল্লাল এবং মো: সাদী আব্বাসী (২০), পিতা- সাকী আব্বাসী। তারা তিনজন দীর্ঘদিন ধরে বগুড়ার শাহজাহানপুর, রানীর হাট ও শাকপালায় মোবাইল ছিনতাই ও চুরির কাজটি সংঘটিত করে আসছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বেশকিছুদিন ধরেই বগুড়ার বিভিন্ন জায়গায় একটি চক্র ফুড পান্ডার গ্রাহক সেজে এবং অনলাইনে মোবাইল বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছে থেকে স্মার্টফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছিলো আমাদের কাছে। মূলত তারই প্রেক্ষিতে চক্রটির তিন সদস্য, চোরাই মোবাইল ও বিপুল পরিমাণ মোবাইলের যন্ত্রাংশ উদ্ধার করেছে জেলা পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, ‘মোবাইল চুরি ও ছিনতাই চক্রের মূলহোতা নূর কবির শাকিল একসময় ফুড পান্ডাতে চাকরি করতেন। সেখানে কাজের সময় তার মোবাইল ছিনতায় হয়ে যায়। পরবর্তীতে সে একই পন্থা অবলম্বন করে এই চক্রের মূলহোতা বনে যান।’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, একটি ছিনতাই হওয়া মোবাইলের সূত্র ধরে ৩টি চোরাই মোবাইল এবং একটি লাল রংয়ের এ্যাপাসি পুরাতন মোটরসাইকেলসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে অভিযানের মাধ্যমে শহরের জামিল নগর দক্ষিন পাড়ার ভাড়া বাসা থেকে একটি ফুড পান্ডার ডেলিভারী ব্যাগের ভিতর থেকে চোরাই ও ছিনতাইকৃত ৩টি আইফোন, ৩৩টি আইফোনের সামনে ও পেছনের অংশসহ স্মার্টফোনের ভিতরের বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশ ৬০ টি উদ্ধার করে বগুড়া জেলা পুলিশ।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মূলহোতা শাকিল জানিয়েছেন, তারা একটি ভাড়া বাসার গোপন কক্ষে মোবাইলের মালিকানা ও পরিচিতি পরিবর্তন করার জন্য এক মোবাইলের যন্ত্রাংশ খুলে অপর মােবাইলের সাথে সংযুক্ত করতেন। পরবর্তীতে সেই চোরাই ও ছিনতাইকৃত মোবাইলগুলো অনলাইনে এবং সরাসরি বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে আসছিলেন।
শুধু তাই নয়, আসামী শাকিল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন, সেটিংস পরিবর্তন এবং জি-মেইল এ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করতে পারতেন বলে জানা গেছে। মোবাইল চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে শাজাহানপুর থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
