ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ১২:১৬ অপরাহ্ণ

বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন অগ্রাধিকার পাবে, চালু করা হবে খাল খনন প্রক্রিয়া : তারেক রহমান

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সকল ফোরামে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক উদ্যোগের পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলকে মরুকরণ থেকে বাঁচাতে  তিস্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আপনাদের প্রিয় দল জাতীয়তাবাদী দল জনগণের সমর্থনে আল্লাহর রহমতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে আগামী দিনে অগ্রাধিকার  ভিত্তিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে ইনশাআল্লাহ। পাশাপাশি অন্যান্য উৎস থেকে পানি সংরক্ষণ করে রাখার জন্য তিস্তার ডান পাশের সাতটি এবং বাম পাশে পাঁচটি শাখা বা উপনদী এগুলোকে খনন করা অত্যন্ত জরুরি, করতে হবে। আমাদের পানির বিকল্প উৎস তৈরি করে সংরক্ষণের জন্য পানি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খাল খনন কর্মসূচি চালু করবো ইনশাল্লাহ।

মঙ্গলবার(১৮ফেব্রুয়ারি) বিকেল পাঁচটায় জাগো বাহে তিস্তা বাচাই স্লোগানে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা এবং মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে অববাহিকার এগারোটি পয়েন্টে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। এর আগে লালমনিরহাটের  রেলওয়ে শুধু পয়েন্টে জড়তার সমাবেশ থেকে তাকে বক্তব্য দেয়ার আহ্বান জানান তিস্তা নদীর রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী এবং বিএনপি’র রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। ১১ টি পয়েন্টে লাখো লাখো মানুষের উপস্থিতিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারেক রহমান। হাত মেরে অভিবাদন জানানতিনি জবাব দেন তিস্তা অববাহিকার মানুষও হাত নেড়ে।তিস্তার ৪৮ ঘন্টার লাগাতার কর্মসূচির প্রশংসা করে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, মানুষ দেখে রাখুক জেনে রাখুক, তিস্তা নদী রক্ষার আন্দোলনের উদ্যোগে, দুই দিনব্যাপী যে অবস্থান সংগ্রামী অভিনন্দন প্রিয় ভাইয়েরা উত্তরাঞ্চলের পানির এই ন্যায্য হিসাব বঞ্চিত মানুষেরা আজকের সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তি কারো করুনার বিষয় নয়, এটা আন্তর্জাতিক  আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাপ্য ,পানি নিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ভারতের কার্যক্রমের বিরোধিতা করে তারেক রহমান বলেন, ” কিন্তু আমরা দেখছি, আন্তর্জাতিক  নদীর পানির ন্যায্য পাওনা আদায় জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষকে এটা  নিয়ে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের মানুষের সাথে অপ্রতিবেশি মূলক আচরণ করেই চলেছে। আপনাদের সকলের জানা আছে আজকে প্রায় ৫০ বছর হল ফারাক্কার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পায় না  আবার তিস্তা  বাংলাদেশের জন্য আরেকটা অভিশাপ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

ভারতে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করে তারেক রহমান বলেন, ” ৫ই আগস্টে আমরা দেখি যে একজন পালিয়ে গিয়েছে এই দেশ থেকে। এই দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। স্বৈরাচার এই দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে। সেই পালিয়ে যাওয়া  হাসিনা  বলেছিলেন ভারতকে আমি যা  দিয়েছি সেটি তারা সারা জীবন মনে রাখবে। ভারত শুধু পলাতক স্বৈরাচারকেই মনে রেখেছে। বাংলাদেশের জনগণকে তারা মনে রাখেনি। এজন্যই বঞ্চিত জনগণের মনে প্রশ্ন, স্বৈরাচার ভারতকে যা দিয়েছে সেই ভারত তাকে আশ্রয় দেওয়া ছাড়া  কি বাংলাদেশকে আর কিছু দিয়েছে।”

প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে কি ধরনের সম্পর্ক হয় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “সারা বিশ্বে সমাদৃত সব প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যেই সমস্যা  হয়, এটা সমাধানও হয়। কিন্তু খুনি স্বৈরাচার ৫ই আগস্ট অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রাখতে গিয়ে ভারতের  সেবা দাসীতে পরিণত হয়েছিল এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশন পর্যন্ত বাতাসে পরিণত করা হয়েছিল। ”

আন্তর্জাতিক ফোরামে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন,  “প্রতিবেশী দেশ ভারত যদি  তিস্তার পানি  চুক্তি করতে অনীহা দেখায় তাহলে দেশ এবং জনগণের স্বার্থ বাঁচাতে, তিস্তাকে বাঁচাতে তিস্তাকে  রক্ষা করতে তার সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদেরকেই আমাদের বাঁচার পথ বেছে নিতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে বিকল্পকে কাজে লাগাতে হবে। প্রয়োজনে  পানির ন্যাজ্য ভিসা আদায় করতে জাতিসংঘ সহ  বিশ্বেট সকল ফোরামে জোড়ালোভাবে বাংলাদেশের দাবি করতে হবে। একই সাথে প্রতিবেশী দেশের সাথে আমাদেরকে কূটনৈতিক কাজও করতে হবে। কূটনৈতিকভাবে আলোচনা শুরু করতে হবে।তিস্তা সহ ৫৪টি নদনদীর পানির রিকশা আদায়ের  উদ্যোগের অংশ হিসেবে অবশ্যই বাংলাদেশকে ৯২ সালের ১৯৯৭ আন্তর্জাতিক পানি কনভেনশনে স্বাক্ষর করা জরুরী হয়ে পড়েছে।”

খালকাটা হলে সারা দূর হবে বন্যা করা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের এই স্লোগান উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন,  “এখানে সম্মানিত মুরুব্বীগনকে উদ্দেশ্য বলতে চাই প্রিয় মুরুব্বীরা মনে আছে সারাদেশে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কর্মসূচির কথা। তার একটা স্লোগান ছিল, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কাছে একটি পরিচিত স্লোগান ছিল প্রিয় স্লোগান ছিল। সেটি  হলো খালকাটা হলে সারা, দূর হবে বন্যা খরা।”হাসিনা সরকারের মানবাধিকার কেড়ে নেয়ার তথ্য উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ” বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার  রাজনৈতিক মানবাধিকার কেড়ে নিয়ে, ভোট ডাকাতি করে,  অবৈধ সম্পদের  সম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল। খুনি স্বৈরাচারের আমলে জাতীয় নির্বাচনকে খেলনার বিষয়বস্তু  বানিয়ে ফেলা হয়েছিল। বিগত ১৫ টি বছর সংসদ জনগণের নির্বাচিত কোনসরকার প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ দেওয়া হয় নাই। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে এই স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে মানুষের অধিকারের সুযোগ এবং সম্ভাবনা আবার তৈরি হয়েছে। ভোটের অধিকার প্রয়োগ করে দায়বদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট  পক্ষের  কোন শক্তি এবং সরকারের কোন হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে এক্ষুনি পলাতক স্বৈরাচার যেন নির্বাচনের সুযোগ না পায়। এ ব্যাপারে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। “কয়েকজন উপদেষ্টার বক্তব্যের সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, “আমাদের অবশ্যই মনে রাখা প্রয়োজন নির্বাচন নিয়ে একেক একেক উপদেষ্টা একেক রকমের বক্তব্য দিচ্ছেন। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একেক উপদেষ্টার একেক বক্তব্য স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনা ও মাফিয়া চক্রের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পথ সুগম করে দেয়। আপনাদের আন্দোলনের তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন পরাজিত হবে।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিস্তা সহ নানা সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন,”   জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে অবশ্যই আমরা সকলকে সাথে নিয়ে সমস্যার সমাধান করব। তবে যতগুলো কথা বললাম যে কিভাবে আমরা কি কি উপায় কি কি করব। তিস্তাপারের মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব বা বাস্তবায়ন করার যে অঙ্গীকার করেছি এই কাজ যদি আমাদেরকে করতে হয় আপনাদের কে একটি দায়িত্ব পালন করতে হবে। আপনাদেরকে একটি কাজ করতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আপনাদের প্রিয় দল এর পাশে থাকতে হবে। আপনাদের সমর্থন দেশবাসীর সমর্থন থাকলে ইনশাল্লাহ আমরা ক্ষমতায় এসে  এই ধরনের তিস্তাসহ আরো  কাজগুলো আছে ইনশাল্লাহ সেই কাজগুলো বা সেই সমস্যার সমাধান করার আমরা সুযোগ পাবো।”তারেক রহমান বলেন, দুইদিন থেকে  আমরা সকলে মিলে এখানে একত্রিত হয়েছি। হাজারো লক্ষ্য মানুষ আপনারা এখানে প্রতিবাদ গড়ে,সারা বিশ্বকে দেখিয়েছেন অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বাংলাদেশের মানুষ কিভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য দুই দিনের এই কর্মসূচিতে আমরা প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করি। প্রতিজ্ঞা হলো জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও জাগো বাহে বাংলাদেশ বাঁচাও জাগো বাহিরে দেশ বাঁচাও।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print