ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ১:৪৬ অপরাহ্ণ

বিপুল কালো টাকায় ‘ভাসছে’ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ৩৬ শতাংশ থিংক ট্যাংক

যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কী নিয়ে বিতর্ক চলবে, তা অনেকটাই নির্ধারণ করে দেয় দেশটির শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন পরামর্শক ও গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান, যাদের বলা হয় ‘থিংক ট্যাংক’।

কিন্তু দেশটির শীর্ষস্থানীয় অনেক থিংক ট্যাংক কালো টাকায় ‘ভাসছে’ বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

এসব কালো টাকার বেশির ভাগই আসে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সরকার, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও পেন্টাগনের সঙ্গে ব্যবসা করা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে।

গবেষণাটি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক ‘কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপনসিবল স্টেটক্রাফট’। এতে নেতৃত্ব দেন প্রতিষ্ঠানটির দুই গবেষক বেন ফ্রিম্যান ও নিক ক্লেভিল্যান্ড-স্টোট।

গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ৫০টি থিংক ট্যাংকের অর্থায়নের স্বচ্ছতা দেখার চেষ্টা করেছেন তারা। দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে (২০১৯-২০২৪) এসব প্রতিষ্ঠান অন্য দেশের সরকার ও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১১ কোটি ডলারের বেশি অর্থ অনুদান হিসেবে পেয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের পেছনে টাকা ঢালার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এর পরেই আছে যুক্তরাজ্য ও কাতার। এই তিনটি দেশ দিয়েছে যথাক্রমে এক কোটি ৬৭ লাখ, এক কোটি ৫৫ লাখ ও ৯১ লাখ ডলার।

অন্যদিকে এসব অর্থের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেয়েছে আটলান্টিক কাউন্সিল, ব্রুকিংস ইনস্টিটিউট ও জার্মান মার্শাল ফান্ড।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এসব থিংক ট্যাংক প্রতিরক্ষাবিষয়ক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে পেয়েছে তিন কোটি ৪৭ লাখ ডলার।

গত পাঁচ বছরে প্রতিরক্ষাবিষয়ক কোম্পানিগুলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ ঢেলেছে নর্থরোপ গ্রুমম্যান, লকহিড মার্টিন ও মিতসুবিশি।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫০টির মধ্যে ৩৬ শতাংশ (১৮টি) থিংক ট্যাংক বিপুল পরিমাণ কালো টাকায় ‘ভাসছে’। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের অর্থায়ন সম্পর্কে প্রায় কোনো ধরনের তথ্যই প্রকাশ করে না।

নয়টি প্রতিষ্ঠান (১৮ শতাংশ) অর্থায়নের উৎসের ব্যাপারে পুরোপুরি স্বচ্ছ রয়েছে। ২৩টি প্রতিষ্ঠান (৪৬ শতাংশ) আংশিক স্বচ্ছ।

গবেষকরা বলছেন, গত পাঁচ বছরে মার্কিন সরকার দেশটির থিংক ট্যাংকগুলোকে প্রায় ১৫০ কোটি ডলার দিয়েছে। এর সিংহভাগই পেয়েছে র‌্যান্ড করপোরেশন, যারা সরাসরি মার্কিন সরকারের সঙ্গে কাজ করে।

কালো টাকায় চলা শীর্ষস্থানীয় ১৮টি থিংক ট্যাংকের তালিকায় রয়েছে আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট, বেলফার সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, ক্যাটো ইনস্টিটিউট, সেন্টার ফর ইমিগ্রেশন স্টাডিজ, সেন্টার ফর পলিসি সিকিউরিটি, সেন্টার ফর ট্রান্সআটলান্টিক রিলেশনস, ডিসকভারি ইনস্টিটিউট ও ফরেইন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট।

ফাউন্ডেশন ফর দ্য ডিফেন্স অব ডেমোক্র্যাসি, গেইটস্টোন ইনস্টিটিউট, গ্লোবাল সিকিউরিটি ইন্সটিটিউট, হার্টল্যান্ড ইনস্টিটিউট, হুভার ইনস্টিটিউশন, ম্যানহাটন ইনস্টিটিউট ফর পলিসি রিসার্চ, মার্কাটাস সেন্টার, নিউলাইনস ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি, থার্ড ওয়ে এবং ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসির নামও আছে এই তালিকায়।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print