২০১০ সালের ২১ মে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব কবিতা কণ্ঠ পরিষদের এক সভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে বক্তব্য দেয়ার সময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী বলায় ১৪ বছর পর তৎকালীন সাবেক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে পঞ্চগড় আমলী আদালত-১ এ মামলা দায়ের হয়েছে।
একই সঙ্গে সেই বক্তব্যের সংবাদ প্রচারের অভিযোগে দৈনিক করতোয়ার সম্পাদক মোজাম্মেল হককে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় চীফ জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলার বিষয়টি জানান মামলার বাদী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আদম সুফি।
এর আগে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাদী হয়ে মামলাটি করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা – জাসাস এর পঞ্চগড়ের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস শেখ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ২১ মে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব কবিতা কণ্ঠ পরিষদের এক সভায় বক্তব্য রাখেন তৎকালীন সাবেক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। সে সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে প্রয়াত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের চর বলা হয়। একই সাথে জিয়াউর রহমানের কারণেই এতদিন যুদ্ধাপরাধের বিচার করা সম্ভব হয়নি এবং বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া তারই ধারাবাহিকতায় যুদ্ধাপরাধের বিচারে বাধা সৃষ্টি করেছেন। ঘটনার দিন বাদী ইউনুস শেখ সভার স্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বক্তব্যটি শুনতে পায়।
এদিকে সেখান থেকে বাদী নিজ জেলা পঞ্চগড়ে আসলে পরদিন (২২ মে) দৈনিক করতোয়া পত্রিকায় সেই বক্তব্যের সংবাদ দেখতে পায়। ঘটনায় মর্মাহত ও বিক্ষুব্ধ হয়ে বিচার পাওয়ার চেষ্টা করলে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভিতি ও হুমকির শিকার হয়। অতঃপর দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ও প্রমানপত্র ছাড়াই শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অশালীন কুরুচি সম্পন্ন ও মানহানিকর কথা বার্তা বলার অভিযোগ তুলে এমন বক্তব্যের বিচারের দাবিতে ১৪ বছর পর তৎকালীন সাবেক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে পঞ্চগড় আমলী আদালত-১ এ মামলা দায়ের হয়েছে।
একই সঙ্গে সেই বক্তব্যের সংবাদ প্রচারের দায়ে দৈনিক করতোয়ার সম্পাদক মোজাম্মেল হককে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আদম সুফি বলেন, ২০১০ সালের ২১ মে সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে রাজাকার এবং যুদ্ধাপরাধী বলেন। তিনি একজন সেক্টর কমান্ডার এবং স্বাধীনতার ঘোষক ছিলেন। উনার সম্পর্কে এমন একটা মন্তব্য একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে মামলা বাদী ইউনূস শেখ আজও ভুলতে পারেননি। তখনই তিনি আইনের আশ্রয় নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে পারেননি। এজন্য এখন তিনি মামলাটি দায়ের করেন। খবরটি করতোয়া পত্রিকায় ছাপা হওয়ায় পত্রিকার সম্পাদককে মামলার আসামি করা হয়। আদলত তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পরবর্তি শুনানীর তারিখ ধায্য করেন।
এসময় জাতীয়তাবাদি এডভোকেট ফোরামের আইনজীবিরা সহ পঞ্চগড় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, সদর থানার সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বোদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সফিউল্লা সফি উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: সময় টিভি অনলাইন