ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ

‎সিরাজগঞ্জে দুই কোটি টাকার সম্পত্তি লিখে নিলেন মেয়ে, ছেলের সংবাদ সম্মেলন

‎সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় এক ভারসাম্যহীন বাবার দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে ফাঁকি দিয়ে বড় মেয়ে হোসনে আরা মিমি দুই কোটি টাকা মূল্যের ৬ বিঘা সম্পত্তি লিখে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

‎হোসনে আরা মিমি ওই উপজেলার অ্যাড. আব্দুল হামিদের (৮০) মেয়ে। তিনি বর্তমানে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

‎বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন অ্যাড. আব্দুল হামিদের ছেলে টিএম নুর এজাজ।

‎সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ শহরের কালিবাড়ী মোড় থেকে চারজন ব্যক্তি নিজেদের ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয় দিয়ে তাকে জোরপূর্বক একটি গাড়িতে তুলে নেয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসা করলে জানায়, তারা একটি বেসরকারি রিহ্যাব সেন্টারে কাজ করেন। তার আপন বড় বোন হোসনে আরা মিমি তাদের ভাড়া করেছে। এসময় তার বোনের সহযোগী সোহাগ নামের এক ব্যক্তিও ছিলেন। পরে তাকে জোরপূর্বক ‘রেনেসাঁ রিহ্যাব সেন্টারে’ আটক রেখে ‘মাদকাসক্ত’ হিসেবে মিথ্যাচার চালানো হয়।‎

‎নুর এজাজ বলেন, রিহ্যাব সেন্টারে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। একই সময়ে সোহাগ তার স্ত্রী মেহেজাবিন মৌ ও শিশুসন্তানকে সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় নিয়ে বড় বোনের বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে এক আত্মীয়ের চল্লিশা অনুষ্ঠানের সুযোগে তার স্ত্রী পালিয়ে তাকে মুক্ত করার চেষ্টা করেন। দীর্ঘ দুই মাস আটক থাকার গত ১৫ মে আত্মীয়-স্বজন অর্থের বিনিময়ে আমাকে রিহ্যাব থেকে মুক্ত করে। এদিকে আমায় রিহ্যাবে আটক রেখে ভারসাম্যহীন বাবার দুই কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৬ বিঘা সম্পত্তি গত ২৩ ও ২৪ মার্চ তারিখে বড় বোন তিনটি দলিলে লিখে নেন। যার দলিল নং- ১২২৮, ১৯৮০ ও ১৯৮১।

‎এসব জমির বাজারমূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা বলে দাবি করেন তিনি। নুর এজাজ আরও বলেন, তার বাবাকে ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, যা তার কাছে ভিডিও প্রমাণ রয়েছে।

‎এ বিষয়ে তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, থানায় অভিযোগ করতে গেলে তাকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আদালতে মামলা করতে গেলে আইনজীবী সমিতির নেতারা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোন সমাধান হয়নি। পরে দুই দফা উকিল নোটিশ দিলেও অভিযুক্তরা আদালতে হাজির হয়নি। উল্টো তদবিরের মাধ্যমে অভিযোগ প্রত্যাহারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

‎সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় মূলহোতা সোহাগ ও তার পরিবার বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নুর এজাজের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং তাকে র‌্যাব দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ সংক্রান্ত প্রমাণ, ফেসবুক মেসেঞ্জারের বার্তা ও অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি এ ঘটনায় দলিল বাতিল, অপহরণ, অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন ও জমি আত্মসাতের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোড় দাবি জানান।‎

‎এদিকে বাবার ১৮২ শতক সম্পত্তি লিখে নেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বড় বোন হোসনে আরা মিমি বলেন, আমরা তিন বোন ও এক ভাই৷ আমিই বড়। বাকি দুই বোন দেশের বাইরে থাকে। তাদের পরামশ্রে আমাদের তিন বোনের অংশ আমার নামে লিখে নেয়া হয়েছে। আর ভাইয়ের অংশ বাদ রাখা হয়েছে। মূলত ভাই ড্রাগ এডিক্টেড হওয়ায় আমরা এই কাজটি করেছি। তাছাড়া তাকে ভালো করার জন্য রিহ্যাবেও রাখা হয়েছিল।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print