বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ইনচার্জ ইকবাল বাহারসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে হঠাৎ করে প্রত্যাহার করে রাজশাহীর রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে (আরআরএফ) সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাজাহান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
গত ১৪ অক্টোবর রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে৷
প্রত্যাহার হওয়া কর্মকর্তারা হলেন— জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ ইকবাল বাহার, পুলিশ পরিদর্শক রাকিব হোসেন, উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ফজলুল হক।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে বগুড়ার ডিবি পুলিশ ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা এলাকা থেকে রাজু মুন্সি (২৫) নামের এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করে বগুড়ায় নিয়ে আসে। পরদিন তাকে একটি প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
রাজু মুন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ—তিনি নিজেকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয়ে বগুড়ার ব্যবসায়ী আব্দুল হক-এর কাছ থেকে কৌশলে ব্যাংক পিন সংগ্রহ করে তার হিসাব থেকে ২৭ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৫ টাকা হাতিয়ে নেন।
ব্যবসায়ীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক রাকিব হোসেন তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দীর্ঘ তদন্ত চালিয়ে রাজুকে শনাক্ত করেন। পরে তাকে গ্রেপ্তারে র্যাবের সহযোগিতা চাওয়া হয়। তবে র্যাবের কাছে পাঠানো অনুরোধপত্রে রাজুকে ভুলবশত একটি ডাকাতি মামলার আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এই ‘ভুল বোঝাবুঝি’ থেকেই তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে দাবি ডিবি ইনচার্জ ইকবাল বাহারের।
তিনি বলেন, “র্যাবকে পাঠানো চিঠিতে ডাকাতি মামলার নম্বর উল্লেখের বিষয়টি ছিল কেবল প্রশাসনিক ত্রুটি। প্রকৃতপক্ষে রাজু মুন্সি ছিলেন প্রতারণা মামলার আসামি। বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কারণেই আমাদের তিনজনকে ডিবি থেকে প্রত্যাহার করে আরআরএফে পাঠানো হয়েছে।”
গ্রেপ্তারের পর রাজু মুন্সির কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত সিমকার্ড ও নগদ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া প্রতারণার টাকায় ব্যাংকে জমা থাকা ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদালতের মাধ্যমে জব্দ করা হয়েছে।
ডিবি ইনচার্জ ইকবাল বাহারের প্রত্যাহার আদেশ বাতিলের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা বৃহস্পতিবার এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
এছাড়া এনসিপি-র এক নেতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রত্যাহার আদেশ প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন।
বগুড়ার পুলিশ সুপার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাজাহান বলেন, ‘তাদেরকে প্রশাসনিক কারনে তাদেরকে সেখানে সুযুক্তি করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এ ব্যাপারে এখনো গণমাধ্যমের কাছে কিছু বলা যাচ্ছে না।’