আন্তর্জাতিক রোলার স্কেটিংয়ে বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে রচিত হলো নতুন অধ্যায়। চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের কারামাই শহরে অনুষ্ঠিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড চায়না-আসিয়ান স্পিড রোলার স্কেটিং সিটি ইনভাইটেশনাল টুর্নামেন্ট’-এ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের একক কোনো স্কেটার—বগুড়ার নাবীয়্যূন ইসলাম পৃথিবী—একাই জিতলেন দুইটি স্বর্ণপদক।
ওয়ার্ল্ড এশিয়া স্কেটিং ও চায়না রোলার স্কেটিং ফেডারেশনের যৌথ তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় ১৭টি এশিয়ান দেশের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এমন কীর্তি গড়েন নাবীয়্যূন। জুনিয়র-এ গ্রুপ থেকে অংশ নিয়ে তিনি প্রথম দিন ৫০০ মিটার স্পিড রেস এবং দ্বিতীয় দিন ১০০০ মিটার স্প্রিন্ট রেসে সবার আগে ফিনিশ করেন।
বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং ফেডারেশনের ৩০ বছরের ইতিহাসে এটিই দেশের সর্বোচ্চ অর্জন। একজন বাঙালি কিশোর হিসেবে এশিয়ান রোলার স্কেটিং টুর্নামেন্টে এককভাবে দুটি স্বর্ণপদক জয় এই প্রথম।
নাবীয়্যূনের এই অর্জনে আনন্দে ভাসছে তার শহর বগুড়া। বগুড়া রোলার স্কেটিং ক্লাবের হয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া এই কিশোর প্রায় আট বছর ধরে স্কেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত। ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কোচ আশরাফুল ইসলাম রহিত—নাবীয়্যূনের বাবা—এই সাফল্যে আবেগাপ্লুত।
তিনি বলেন, “এশিয়ার ১৭টি দেশের স্কেটারদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে দুটি স্বর্ণপদক জেতা কল্পনার মতোই। এটাই প্রমাণ করে, বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা ইচ্ছে করলে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও নিজের জাত চিনাতে পারে।”
নাবীয়্যূনের পাশাপাশি বাংলাদেশ দলের হয়ে আতাহার শিহাব অদিত আরও দুইটি পদক অর্জন করেন। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ দল এবার চারটি পদক ঘরে তোলে। পুরো দলটি গত ৮ অক্টোবর চীনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল এবং প্রতিযোগিতা শেষে ১৫ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
দলে আরও ছিলেন আকিফ হামিদ, মুনজির আফনান বিশ্বাস, জারিফ আহমেদ সরকার, ফ্যালিশা রুজবেহ, আফরাজ বিন আরিফ এবং নাবীয়্যূন ইসলাম পৃথিবী।
বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান বলেন, “নাবীয়্যূনের পারফরম্যান্স শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং পুরো এশিয়ার স্কেটিং ইতিহাসের জন্যই এক অনন্য মাইলফলক।”