আজ থেকে আট দশক আগে জন্ম নিয়েছিল বাংলা এক সংগ্রামী মা। যাঁর জীবন জুড়ে একদিকে রয়েছে মমতা, দয়া, স্নেহ এবং ভালোবাসা অপর দিকে পর্বতসম দৃঢ়তা, অসত্যের সাথে আপোষ না করার মানসিকতা ও সংগ্রাম।
মধ্যবিত্ত গৃহিণী থেকে হয়ে উঠেছেন বাংলার গণতন্ত্রের মা।গণতন্ত্রকে যখন গলা চিপে ধরেছিল একনায়কতন্ত্রের রাক্ষস তখন যেন তিনি এক সংগ্রামী সাহসী মাতা হিসাবে অবতারণা করে সেই রাক্ষস থেকে রক্ষা করল গণতন্ত্র কে। সেদিন অনেকই ক্ষমতার লোভে পড়েছিল কিন্তু মা যে তার সন্তানদের লোভ ছাড়া আর কোনো লোভে পড়ে না।
এক মায়ের কাছে সাতরাজার ধনের চেয়েও বড় তার সন্তান। তাই তো তিনি দ্বার্থহীন কন্ঠে বলেছিলেন” প্রধানমন্ত্রী হওয়ার শখ আমার নেই। আমি শুধু জনগণের জন্য কাজ করতে চায় ”
জনগণকে যদি সন্তান হিসাবে মনে না করতেন তাহলে তো বহু আগেই রক্তের বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার সুযোগ তার ১৯৯৬ সালেও ছিল।
১৯৮১ সালে স্বামীর মৃত্যুতে যখন তাকে শোকাহত করেছিল। সেই সময় বাংলাদেশ যেন নেতৃত্ব শূণ্য হয়ে পড়েছিল। ক্ষমতার ভাগ বাটোয়ারাতে সবাই যখন ব্যস্ত। এক শোকাহত গৃহিণী সেদিন বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রপতির গড়া দলের হাল ধরলেন।সেদিন তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হাল ধরেন নি, হাল ধরেছিল বাংলাদেশের।
এক সাধারণ গৃহিণী ভিতরে যে মায়া যে মমতা, যে ভালোবাসা তা উজাড় করে দিল বাংলাদেশ কে…
রক্ষাস প্রলোভন দিল সাতরাজার ধনের কিন্তু তিনি ঘৃণ্যর সাথে প্রত্যাখান করলেন সেই থেকে সন্তান জানতে শিখল তাদের মা আপোষহীন হওয়ার গল্প। মায়ের আপেষহীনতা থেকেই সন্তানরা শিখল কিভাবে অসত্যের সাথে আপোষহীনতা দেখিয়ে সংগ্রাম করতে হয়। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে যখন তরুণ ছাত্রদের প্রলোভন দেখিয়েছিল অর্থ আর ক্ষমতার তাঁরা মায়ের আর্দশ আঁকড়ে ধরে আপোষহীন নীতি গ্রহণ করেন। মায়ের দেখানো পথেই যে সফলতা তার প্রমাণ মিলল ৫ আগস্টে….
একনায়কের সাথে আপোষহীন নীতি গ্রহণ করে গৃহিণী মা যে সংগাম করেছিল তাকে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।
এতক্ষণে হয়ত প্রিয় পাঠকবৃন্দ বুঝে গেছেন আমি আমাদের সেই মমতাময়ী মায়ের গল্প বলছি।তিনি আমাদের বেগম খালেদা জিয়া। যার হাত ধরে বাংলাদেশ একনায়কতন্ত্রের শিখল থেকে গণতন্ত্রের মুক্ত বাতাসে এসেছিল।
তিনি শুধু দেশবাসীকে দিয়ে গেছেন বিনিময়ে কিছু তিনি নেন নি। দেশে যখন অশুভ শক্তি আগমন হয়েছে তার শিকারের প্রথম লক্ষ্যবস্তু করেছে খালেদা জিয়াকে…
আমরা তাঁকে না চিনলেও এদেশের শত্রুরা তাকে ঠিক চিনে। তারা জানে খালেদা জিয়া বাংলাদেশে মুক্ত থাকলে দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করা যাবে না। তাই তো তাকে মিথ্যা আর প্রহসনের বিচারের কারাবন্দী করা হয়।তিনি সেদিন বলেছিলেন ” ন্যায় বিচার হলে আমার কোন ভয় নেই, কারণ আমি কোনো অন্যায় করি নি।” তাঁর এমন নির্ভীক চিত্তে বলা কথাই সেদিন বাংলাকে বলেছিল খালেদা জিয়ার সততা এবং সাহসের ভিত্তি কতটা মজবুত। শত নির্যাতন মাথা নিয়ে সেদিন খালেদা জিয়া বলেছিলেন” দেশের বাহিরে আমার কোনো ঠিকানা নাই।এটাই হলো আমার ঠিকানা।। ”
এ বক্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ বুঝেছে তার যোগ্য নেতৃত্ব সে পেয়ে গিয়েছে।বাংলাদেশ কে যারা শাসন করে বা করতে চায় সবাই ছিল পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের তাবেদার। বেগম জিয়ার ঠিকানা যেহেতু বাংলাদেশে সুতরাং তার ভারতের তাবেদার হওয়ার সুযোগ নেই।
আজ সেই মহান নেত্রীর জন্মদিন,যার জন্মে বাংলা পেয়েছিল এক মহীয়সী নারী। যার জীবনী বাংলার নারী সমাজকে আলোকিত করবে, আগামীর পথ দেখাবে।এক সাধারণ গৃহিণী থেকে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গল্প যার। বেগম জিয়ার এই ৮০ তম জন্মদিনে তার ক্ষুদ্র কর্মী হিসাবে, তাঁর সন্তান হিসাবে এই দোয়া করি আল্লাহ তাঁর ছায়া যাতে আমাদের উপর দীর্ঘ করে দেন।
আবু হাসান, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, বগুড়া জেলা শাখা।
