গেল কয়েকমাসে নিত্যসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস উঠেছিল ক্রেতাদের। তবে বগুড়ার বাজারে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে বেশকিছু পণ্যের দাম। এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে ডিম, মুরগী ও বিভিন্ন সবজির দাম। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছেন ভোক্তারা। তবে আবারও বেড়েছে তেল, আটা-ময়দা ও মাছের দাম।
বগুড়া শহরতলীর বিভিন্ন বাজারে বুধবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঘুরে বাজারদরের এ চিত্র দেখা গেছে।
সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে হঠাৎই বেড়ে যায় ব্রয়লার মুরগী ও ডিমের দাম। এসময় মুরগির কেজি ছুঁয়েছে ১৯০ টাকা। এক ডজন ডিম বিক্রি হয় ১৪২ থেকে ১৪৫ টাকায়। এ কারণে বিপাকে পড়েন ভোক্তারা। বাধ্য হয়ে সীমিত আয়ের মানুষ মুরগি ও ডিম কেনা কমিয়ে দেয়। ফলে নিম্নমুখী হয় এই পণ্যের বাজার।
আরো পড়েনঃ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ কষ্টে আছে: ওবায়দুল কাদের
ফতেহ আলী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। যা ১৫ দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ১৯০ টাকায়। একই সাথে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০৮ টাকাতে, যা আগে ছিল ১৪৪ টাকা। অপরিবর্তিত থেকে হাসের ডিম হালিতে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে।
দাম কমেছে সব ধরনের সবজিরও। এখন প্রতি কেজি বেগুন মানভেদে ৪০-৪৫ টাকা, পটল ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, মরিচ ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গেল দু’সপ্তাহ আগেও ১ কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছিল ২০০ টাকায়।
বগুড়ার বাজারগুলোতে কমেনি মাছের দাম। এখনো আগের দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ। রুই ৩২০ টাকা, মৃগেল ২৫০-২৮০ টাকা, কাতল ৩৫০ টাকা এবং ইলিশ মাছ মানভেদে কেজিতে ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে লিটার প্রতি ৭ টাকা বেড়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম। ক’দিন আগেও ১ লিটার তেলের দাম ছিল ১৮৫ টাকা। তবে নতুন করে দাম নির্ধারণ করার কারণে সেই তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯২ টাকায়। এছাড়াও বেড়েছে আটা-ময়দার দাম। খোলা আটা ৫০ টাকা ও ময়দা ৬২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
গোশতের বাজারেও দেখা গেছে ক্রেতার সংকট। গরুর গোশত ৬৫০ টাকা ও মানভেদে খাসির গোশত ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্র্যন্ত বিক্রি হচ্ছিল। চাহিদা থাকা সত্বেও গোশতের বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ভোক্তারা।
ফতেহ আলী বাজারে বাজার করতে আসা সাদমান সাকিব জানালেন, গেল কয়েকমাসে যেভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে সেভাবে তো আমাদের বেতন বৃদ্ধি পায়নি। এখন বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমেছে। তাতেও সন্তুষ্ট হওয়া যাচ্ছে না। কেননা এখনো ইচ্ছা থাকা সত্বেও অনেক জিনিসই কিনতে পারছি না।
ফতেহ আলী বাজারের মুরগী ব্যবসায়ী রমজান আলী জানান, ‘বর্তমানে ব্রয়লার মুরগী ১৬০ টাকা, লেয়ার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লোডশেডিং ও খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এসব পণ্যের দাম ওঠানামা করছে বলে দাবি করছেন এই বিক্রেতা।
সবজি বিক্রেতা খোকন মন্ডল বলেন, গত কয়েকদিনের তুলনায় কয়েকটি সবজির দাম কমেছে। বেগুন, পটল ও মরিচের দাম একেবারেই কমে গেছে। এছাড়াও আগের দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, রসুন ও আদা। সবজির দাম কমলেও বাজারে আশানুরুপ ক্রেতার ভিড় নেই।
কৃষি বাজারের বিক্রেতা আমিনুল জানান, গত কয়েক দিনে বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। চলতি মাসেই দুই দফায় সব ধরনের চাষের মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকারও বেশি। মাছের সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে জানিয়েছেন তিনি।
এনসিএন/এআইএ