ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৩:৩৭ অপরাহ্ণ

সুদের টাকা দিতে না পারায় হত্যার অভিযোগ

নওগাঁয় আলোচিত সুমন হত্যাকাণ্ড মামলার প্রধান আসামি বুলবুল গ্রেপ্তার

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর কম্পিউটার ব্যবসায়ী সুমন হোসেন (২৩) হত্যাকাণ্ড মামলার প্রধান আসামি বুলবুল হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ২১নভেম্বর ভোরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিন দুপুরের পর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) গাজিউর রহমান।

গ্রেপ্তার বুলবুল হোসেন পত্নীতলা উপজেলার গাহন গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে। আর নিহত সুমন হোসেন মহাদেবপুর উপজেলার বিলছাড়া চকপাড়া গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। সুমন পত্নীতলার নজিপুর মসজিদ মার্কেটে কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতো। পাশাপাশি নজিপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে গাজিউর রহমান জানান- গত ১৭ তারিখ রাত সাড়ে ১০টায় নিজের ফেসবুকে আইডিতে লাইভে এসে সুমন দাবি করেন বুলবুল হোসেনের কাছ থেকে সুদের ওপর ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। এই ঋণের টাকা দেওয়ার সময় বুলবুল তার কাছ থেকে স্বাক্ষর করা ফাঁকা স্ট্যাম্পও নেন। সেই টাকা বৃদ্ধি পেতে পেতে ১০ লাখ টাকা হয়ে যায়। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল এবং বুলবুল সুমনকে চাপও দিচ্ছিলেন। সেই টাকাই সুমন রাতে মহাদেবপুর উপজেলা থেকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় রাস্তার মাঝখানে বুলবুল তার কিছু লোক দিয়ে তাকে ধাওয়া করে মেরে ফেলার চেষ্টা করছেন বলে লাইভে বলেন। এরপর একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।

তিনি আরও জানায়- এ ঘটনার পর থেকে বুলবুল পালিয়ে বেড়ায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে বুলবুল এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন। তবে তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে। তারপর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এই হত্যাকান্ডের সাথে কারা কারা জড়িত এর মূল কারণ বেরিয়ে আসবে। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত রবিবার ১৭ নভেম্বর দিবাগত রাতে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার নাদৌড় এলাকায় সুমনকে হত্যা করে গলায় দড়ি বেঁধে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে ওই দিন রাতে মারা যাবার আগে ‘সুমন হোসেন’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে করা লাইভে কিছু অডিও কথা বলতে শোনা যায়। পাঁচ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ওই অডিওতে অভিযোগ করা হয়, বুলবুল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেন সুমন। সুদের কিস্তি বাঁকি পড়ায় সুমনের সঙ্গে বুলবুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই কারণে আজ তাকে মারপিট করা হচ্ছে বলে বলতে শোনা যায়।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print