ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ২:৪৯ অপরাহ্ণ

ওএমএস চালুর মাধ্যমে চাল ও আটা পেতে চায় তারা

নওগাঁয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ হতদরিদ্রদের

নওগাঁয় চার মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে স্বল্পমূল্যে খোলা বাজারে খাদ্যশস্য (ওএমএস) এর চাল ও আটা বিক্রি। অভিযোগ খাদ্য বিভাগ থেকে পৌরসভার ১৫ টি কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার কারণে স্বল্পমূল্যে চাল ও আটা পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছে হতদরিদ্ররা। অতিষ্ঠ হয়ে সেই চাল ও আটা পাওয়ার আশায় রাস্তায় এসে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ঘেরাও করেছে তারা। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ঘেরাও করে ওএমএস কার্যক্রম চালুর দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ওই সকল সুবিধাভোগী হতদরিদ্র ও নিন্ম আয়ের মানুষরা। এসময় বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড হাতে ঘন্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় তাদের। পরে জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক এনামুল কবিরের আশ্বাসে সেখান থেকে সরে যান তারা।

বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের আগে নওগাঁ পৌরসভা এলাকায় ১৮টি কেন্দ্রে ওএমএস ডিলারদের মাধ্যমে হতদরিদ্র ও নিন্ম আয়ের মানুষদের মাঝে স্বল্প মূল্যে চাল ও আটা দিতো সরকার। ৫ই আগস্টের পর ১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে হঠাৎই ১৫টি কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে খাদ্য বিভাগ। এতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। তাই অনতিবিলম্বে ওএমএস সবকটি কেন্দ্র চালুর দাবি তাদের। শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্টান্ড এলাকা থেকে আসা বিক্ষোভে অংশ নেয়া রিক্সা চালক সোহেল রানা বলেন, সারাদিন রিক্সা চালিয়ে যে আয় হয় সেটা দিয়ে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য। ওএমএস কর্মসূচি চালু অবস্থায় কম দামে চাল ও আটা কিনে কিছুটা সামাল দিতাম। সেই চাল-আটা টানা ৪ মাস যাবত পাচ্ছি না। তাই দুই বেলা শান্তিতে পেটপুরে খাওয়া হচ্ছেনা। বাধ্য হয়ে পেটের ক্ষুধার জ্বালা নিয়ে ফুড অফিসে এসে দাঁড়িয়েছি। কি কারণে এটি বন্ধ রয়েছে সেই কারণ কর্মকর্তাদের কেউই স্পষ্টভাবে বলতে চাইছেন না।

ইঁদুর বটতলী এলাকা থেকে আসা মানোয়ারা বেগম বলেন, জীবিকার তাগিদে বৃদ্ধ বয়সে এসেও রাস্তার আনাচেকানাচে বসে বিভিন্ন ফলমূল বিক্রি করে আয় করি। সেই রোজগার দিয়ে ৫৪ টাকা কেজি দরে চাল কিনে খাওয়ার সাধ্য আমাদের নেই। তাই ওএমএস-ই শেষ ভরসা ছিলো। গরীবের সেই চাল-আটা নিয়ে নোংরা রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। নয়তো আমাদের অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটানো ছাড়া উপায় থাকবে না।

শহরের বিভিন্ন মহল্লা থেকে আসা অনেকেই বলেন, পাশ্ববর্তী জেলাগুলোসহ বিভিন্ন উপজেলায় পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের পরেও ওএমএস কার্যক্রম সচল রেখেছে খাদ্য বিভাগ। অথচ এখানে অযৌক্তিকভাবে নতুন ডিলার নিয়োগের নামে সময়ক্ষেপণ করে যাচ্ছে। আর তাদের এই রাজনীতির মাশুল দিতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের।

নওগাঁ জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক এনামুল কবির বলেন, বন্ধ থাকা ওএমএস কেন্দ্র চালুর দাবী নিয়ে অফিস চত্বরে আসা ভোক্তাদের কথা শুনেছি। তাদের দাবীর বিষয়গুলো

জেলা ওএমএস কমিটি বরাবর উত্থাপন করা হবে। শীঘ্রই ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত নিয়ে এই সংকট সমাধান করা হবে।

জেলা ওএমএস কমিটির সভাপতি ও নওগাঁর জেলা প্রশাসক আব্দুর আউয়াল বলেন, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের পর নওগাঁ পৌরসভা এলাকার অধিকাংশ ওএমএস ডিলার

সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে যৌথ মতামতের ভিত্তিতে ১৫টি কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছিলো। সেই সাথে নতুন ডিলার নিয়োগের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হয়। যেহেতু তারা বিক্ষোভ করেছেন, প্রয়োজনে যৌথ মতামতের ভিত্তিতে আবারো কেন্দ্রগুলো চালু করা হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print