বৃহস্পতিবার সারা দেশে এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফল পাওয়ার পর পরীক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ করেছে আনন্দ, কেউ হয়েছে হতাশ। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পেয়েছে সর্ব্বোচ্চ পাশের হার। আবার কোন প্রতিষ্ঠান ধরে রেখেছে তার পাশের হার। কিন্তু নওগাঁয় এবার তিন প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করেনি কোন পরীক্ষার্থী। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, জেলার মহাদেবপুর উপজেলার দুইটি ও আত্রাই উপজেলার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করেনি কোন পরীক্ষার্থী। ফলে বন্ধ হতে পারে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিও।
জেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা, সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেলার ১১ টি উপজেলা থেকে মোট ৫ হাজার ৪৩০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে পাশ করে মোট ৩ হাজার ৭৫১ জন। আর ফেল করেছে ১ হাজার ৬৭৯ জন পরীক্ষার্থী। এরমধ্যে মহাদেবপুর উপজেলার সোনাকুড়ি মালাহার ইসলামীয়া মহিলা দাখিল মাদরাসা থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৭ জন পরীক্ষার্থী সবাই ফেল করে, একই উপজেলার সফাপুর আলিম মাদরাসা থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কেউ পাশ করেনি।
এছাড়াও জেলার আত্রাই উপজেলার ফটকিয়া বাঁশবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসা (নন এমপিওভুক্ত) থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন ২ জন পরীক্ষার্থী। সেই দুইজনই ফেল করেছে।
সর্বশেষ মাদরাসা এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোর ৫ এর ৩ ধারায় বলা হয়েছে পরিশিষ্ট “খ” অনুসারে মফস্বল এলাকায় দাখিল সহশিক্ষা মাদরাসায় নির্দিষ্ট সংখ্যক অর্থাৎ ২৫০ জন ও মহিলা দাখিল মাদরাসায় ২০০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে এবং পরিশিষ্ট “গ” তে বলা হয়েছে মফস্বল এলাকার একটি মাদরাসা এমপিওভুক্ত হতে গেলে সেই মাদরাসায় ন্যুনতম পরীক্ষার্থী থাকতে হবে ১৮ জন এবং ৫৫% হতে হবে পাশের হার। এমপিও নীতিমালার ১৮ এর “ক” ধারায় বলা হয়েছে, এ নীতিমালার ৫ এর (ক) ও (খ) বর্ণিত আবশ্যকীয় শর্ত পূরণ না করলে বা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির শর্ত ভঙ্গ প্রমাণিত হলে প্রতিষ্ঠানের এমপিও স্থগিত/বাতিল করা যাবে।
ফটকিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার গোলাম মোস্তফা বলেন, আমার মাদ্রাসা থেকে মোট চারজন শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছিল। এর মধ্যে একজন ছাত্রীর বিয়ে হওয়ায় এবং একজন ছাত্র বিদেশে চলে যাওয়ায় পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেনি। এছাড়া দুইজন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষার মাঝা- মাঝি সময়ে একজন শিক্ষার্থীর সড়ক দূর্ঘটনায় হাত ভেঙ্গে যাওয়ায় বাকীঁ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেনি। তবে একজন পরীক্ষর্থী নিয়মিত পরীক্ষায় অংশ নিলেও সে ফেল করেছে। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর ধরে মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় অনেক শিক্ষকরা পাঠদানে অমনোযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে লেখাপড়া ভাল হয়নি। এতে করে ফলাফলে এমন বিপর্যয় ঘটেছে।
সোনাকুড়ি মালাহার মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় সুপার মো. আকবর আলী বলেন, আমাদের এটা গ্রাম এলাকা। এখানে অনেক শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়ে যায়। তাছাড়া এবারে পরীক্ষা কড়াকড়ি হওয়ায় ফল এমন হয়েছে।
নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত শিক্ষা কর্মকর্তা ও অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজাররা ফলাফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর পরে হঠাৎ করে পরীক্ষা হলে কড়াকড়ি হওয়ায় এমন ফল হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে এবারে সবাই ফেল করেছে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
