মে ৪, ২০২৪ ৯:৪০ এএম

নওগাঁয় তুলে ধরা হলো ১৯৭১ সালের শরণার্থীদের দুর্দশার চিত্র

প্রথমবারের মতো নওগাঁয় তুলে ধরা হলো ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নওগাঁর রোড হয়ে ভারতের বালুরঘাট গমনকারী শরণার্থীদের ক্লান্তি ও দুর্ভোগ দুর্দশার চিত্র। ঐতিহাসিক ২০ এপ্রিলের এই দিনে ‘রোড টু বালুরঘাট’ স্মরণ করলো নওগাঁবাসী। প্রায় ৬০ মিনিটে ৩ কিলোমিটার পদযাত্রায় যুদ্ধকালীন নওগাঁ রোডের শরণার্থীদের যুদ্ধ বিভীষিকা ও অবর্ণনীয় দুর্দশা তুলে ধরা হয় এই প্রতীকী পদযাত্রার মাধ্যমে। নওগাঁর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করে। অবিকল শরণার্থীর বেশে শনিবার ২০ এপ্রিল শহরের তাজের মোড় থেকে প্রতীকী পদযাত্রাটি নিয়ে বের হন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। এসময় তারা একাত্তরের বালুরঘাট গমনকারী শরণার্থীদের ক্লান্তি ও দুর্ভোগ দুর্দশার চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। আবার একমাত্র সন্তানের অনাহারী তাকে নিয়ে হেঁটে চলার দৃশ্যসহ নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই আয়োজনে। একুশে পরিষদ প্রতিষ্ঠার পর থেকে নওগাঁ ও তার আশেপাশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস খুঁজে খুঁজে বের করে তা সংরক্ষণ করা, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে স্বীকৃতি প্রদান কাজে সহযোগিতা করা, জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা গণকবরগুলোর সন্ধান করাসহ বিভিন্ন ধরণের সামাজিক কাজগুলো করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান প্রজন্মকে সেই সময়ে যারা শরণার্থী ছিলেন তাদের দু:খ্য, দুর্দশা ও ভোগান্তি সম্পর্কে জানাতেই মূলত এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।  একুশে পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারী এর সভাপতিত্বে শরণার্থীদের প্রতীকী পদযাত্রা অংশগ্রহণ করেন, উপদেষ্টা ডাক্তার মইনুল হক দুলদুল, সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যক্ষ বিন আলী পিন্টু, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, সাইমা ফেরদৌসী, নাইস পারভীন, গুলশানারা, সুবল চন্দ্র মন্ডলসহ প্রমুখ। একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি এ্যাড. ডি.এম. আব্দুল বারী বলেন, ‘আমরা ৭১ এর ইতিহাস ভুলে গেছি। ৫৩ বছরের আগে কি ঘটেছিল। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের বর্বরোচিত অত্যাচার, নিপীড়ন, গণহত্যা থেকে বাচঁতে যুদ্ধের শুরু থেকে এপ্রিল মাসে পায়ে হেঁটে নওগাঁর রোড় হয়ে হাজার হাজার শরণার্থীরা বালুরঘাটে আশ্রয় নেয়। সে সময় চলার পথে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। নওগাঁর মূল ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী এই জেলার সকল তরুণ প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের জানানোর উদ্দেশ্যেই এই আয়োজনটি করা হয়েছে। তারা জানুক যে ৫৩ বছর আগে এই জেলায় কি হয়েছিল। একুশে পরিষদের পক্ষ থেকে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সঠিক ভাবে তুলে ধরার এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন আগামীতেও অব্যাহত রাখা হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print