বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের পৌতা সড়কের দুই পাশে সারি সারি গাছের ফাঁকে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকশ মরা গাছ। এগুলো এখন যেন পথচারী ও যানবাহনের জন্য একেকটি মরণফাঁদ। দীর্ঘদিন ধরে গাছগুলো শুকিয়ে গেলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ কিংবা বন বিভাগ—কেউই অপসারণের উদ্যোগ নেয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঝড়-বৃষ্টির সময় এসব গাছের ডাল ভেঙে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়েই এই পথে যানবাহন চলছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, কদমকুড়ি মোড় থেকে পৌতা চারমাথা পর্যন্ত অন্তত অর্ধশতাধিক নিম ও শিশুমনি গাছ পুরোপুরি মরে গেছে। কিছু গাছের ডাল ভেঙে রাস্তায় পড়ে আছে, আবার কিছু হেলে আছে সড়কের দিকেই। এছাড়া পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কেও একই চিত্র—রাস্তার দুই ধারে মরা গাছের ডালপালা ঝুঁকে আছে সড়কের দিকে, আর যানবাহন চলছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
পথচারী ও স্থানীয়দের আতঙ্ক এখন নিত্যসঙ্গী।বাইকচালক পলাশ খান বলেন, “আমি বাইক নিয়ে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ করে এক মরা ডাল ভেঙে আমার কাঁধে পড়ে। অল্পের জন্য চোখে লাগেনি। আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছি।”
ভ্যানচালক মশিউর রহমান জানান, “প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাত্রী ও মালামাল বহন করি। মরা গাছের অবস্থা ভয়াবহ। যদি দ্রুত কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেয়, বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে সময় লাগবে না।”
ইজিবাইকচালক মামুন হোসেন বলেন, “ঝড়-বৃষ্টির দিন তো বটেই, সাধারণ দিনেও ভয় লাগে। কখন যে গাছ ভেঙে গাড়ির ওপর পড়ে বলা মুশকিল। পোকা খেয়ে গাছগুলো একেবারে নরম হয়ে গেছে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগের দায়িত্বশীলদের নজরদারির অভাবে শুধু মরা গাছই নয়, জীবিত গাছও এখন অসাধু ব্যক্তিরা কেটে বিক্রি করছে। দিনের আলোয় কড়ইসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের মোটা ডাল কাটার অভিযোগ উঠেছে।
বন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমি নয় মাস আগে যোগ দিয়েছি। মরা গাছের বিষয়ে আমার জানা নেই। তাছাড়া ওই গাছগুলো আমাদের আওতায় নয়, বরেন্দ্র প্রকল্পের এলাকায় পড়েছে।”
কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনিক দায়িত্ব এড়িয়ে এমন উত্তর দিয়ে কোনোভাবেই দায়মুক্ত হওয়া যায় না। কারণ—সড়কের পাশের মরা গাছগুলো যে কোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ডেকে আনতে পারে। পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন— “মানুষের জানমাল রক্ষায় দ্রুত মরা গাছগুলো অপসারণ করা হোক।”