নওগাঁর রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে চলছে টানা হেঁচড়া। এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এবার আদালতে করা মামলার রায়ের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের অনুমতি পাওয়ার দাবি করেছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক নজরুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ আদালত তাঁর পক্ষে আদেশ দেওয়ার পরও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব বুঝে না দেওয়ার অভিযোগ করছেন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। আর অফিসিয়ালভাবে অনুমতি পেলে বিষয়টির সুরাহা হবে বলে মন্তব্য করছেন বর্তমান সংশ্লিষ্টরা। এদিকে অভিভাবকসহ সচেতন মহল চায় প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন নিয়ে জটিলতার দ্রæত নিরসস হোক।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিতে আসা নজরুল ইসলাম বলেন, আমি ১৯৯২ সালে অত্র বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। পরবর্তীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে ২০০৪ সালের ২৮মার্চ প্রধান শিক্ষক হিসেবে এই বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালনের জন্য মনোনিত হই। এরপর যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন শুরু করি। কিন্তু একটি মামলার কারণে আমাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়। এরপর দীর্ঘ ২০ বছর আইনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে আমার পক্ষে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের জন্য রায় দেন নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালত এর বিচারক। কিন্তু আমি আদালতের রায় বিভিন্ন দপ্তরে দিয়ে আসলেও এর কোনো সুরাহা করেননি সংশ্লিষ্টরা। তাই আজ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব বুঝে নিতে এসেছি। আর আমি দায়িত্ব নিতে আসায় অভিভাবক, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় অনেকেই খুশি।
জানতে চাইলে সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চাঁদ সুলতানা পারভীন বলেন, আমি অফিসের কাজে বাহিরে আছি। আদালতের রায়ের বিষয়ে আমি অভিজ্ঞ নয়। আমার বিদ্যালয়ের সভাপতি একজন ম্যাজিস্ট্রেট, তাই উনিই ভালো বলতে পারবেন। দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনাকেতো অফিসিয়ালভাবে কোনো অনুমতি বা কাগজপত্র দেওয়া হয়নি। যেমন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, ইউএনও অফিস, জেলা শিক্ষা অফিস এমনকি রাজশাহী ডিডি স্যার বলেন। কোথাও থেকে তাকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। কারণ এই বিদ্যালয় সরকারি হয়েছে, তাই অফিসিয়ালভাবেই তাকে আসতে হবে এমনটিই আমি জেনেছি। তাই বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অফিসিয়ালভাবে নিয়ম অনুযায়ী কোনো আদেশ আসলে সেটা পালন করা হবে।
জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সভাপতি রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে তাবাসসুম বলেন, শিক্ষক নজরুল ইসলাম আমার কাছে আবেদন করেছেন। আমি বিষয়টির তদন্ত দিয়েছি। এছাড়া যেহেতু বিদ্যালয়টি সরকারি, তাই সিদ্ধান্তের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হবে।
জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমান বলেন, আমাদের অফিস থেকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি শিক্ষক নজরুল ইসলামকে।