মে ২০, ২০২৪ ২:০৪ এএম

বগুড়ায় এবার সরিষার তেল উৎপাদিত হবে সাড়ে  ২৫ হাজার মেট্রিক টন

সরিষা চাষে বগুড়ার কৃষকরা বিপ্লব ঘটিয়েছে। কৃষকের আঙিনায় চলছে সরিষা মাড়াই। এবার আবহাওয়া অনুকুল থাকায় সরিষা চাষে সরিষার বাম্পার ফলন হবে এমনটাই আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

স্বল্প খরচে বেশি লাভজনক হওয়ায় বগুড়ার  কৃষকরা সারিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছে। সয়াবিনকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে সরিষা। 

জেলা কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বগুড়ায় এবার উৎপাদিত হবে সাড়ে ২৫ হাজার টন।

সারিষা চাষে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে কৃষক। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে এমন তথ্য জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক। 

জেলায় এবার ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু এবছর জেলায় ৩৭ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। 

কৃষি কর্মকর্তারা আরো জানান, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয়ে থাকে ৫ হাজার টাকা। বিঘাতে প্রায় ৫ মন সরিষা উৎপাদন হয়ে থাকে। কিন্তু জেলার শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়ার ইউনিয়নের কৃষক শাহাদৎ আলম জানান, তিনি এবার এক বিঘাতে  ৪ মন সরিষা পেয়েছেন। বিঘাতে তার উৎপাদন খরচ হয়েছে  আড়াই থেকে ৩  হাজার টাকা। গত মৌসমে আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে।  

জেলার কৃষি বিভাগ জানায়, এক বিঘাতে আলু চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। স্বল্প খরচে বেশি লাভের কারনেই কৃষক সরিষা চাষ করছে। এ ছাড়া সরকার ৩ বছরের মধ্যে ভোজ্য তেলে স্বয়ং সম্পূর্ন হতে চায়। আমদানি সেয়াবিন তেলের উপর সরকার নির্ভর করতে চায় না। 

 ইতো মধ্যে দেশের মানুষের মধ্যে সরিষার তেল খাওয়ার প্রবনতা বেড়েছে।

জেলার কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বিঘাতে আলু উৎপাদনে খরচ পড়ছে প্রায় ৪০ হাাজার টাকা। সেখানে নিজের জমিতে সরিষা চাষে খরচ হচ্ছে ২/৩ হাজার টাকা। আর পত্তন (লীজ) নেয়া জমিতে খরচ হচ্ছে (সার ও অন্যন্যা খরচ সহ) ৫ হাজার টাকা। 

যে জমিতে মরিচ হয়ে থাকে সেই জমিতে সরিষা চাষে খরচ আরো কম হয়ে থাকে। কারন হিসাবে কৃষকরা জানান, মরিচের জমিতে মরিচ উত্তোলনের পর সার থেকে যায়। এ কারনে সারের প্রয়োজন হয় না। তাই সেই জমিতে সরিষা চাষে খরচ বিঘাতে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা পড়ে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, এবার বগুড়ায় ৩৭ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে যে সরিষা চাষ হয়েছে তাতে ফলন আসবে ৬৩ হাজার ৮১৭ মেট্রিক টন। যা থেকে সরিষার তেল পাওয়া যাবে ২৫  হাজার ৫৫০  মেট্রিক টন। 

তারা আরো জানান এবার সারা দেশে সরিষার ব্যাপক ফলন হয়েছে দেশের অনেক মানুষ সরিষার তেল ব্যবহার শুরু করেছে।

সরিষার তেলের উপর নির্ভরশীল হলে সয়াবিন  আমদানী কমে যাবে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় রোধ হবে। সরকারের কৃষি বিভাগের এটি একটি বিরাট সাফল্য বলে মনে করেন জেলা কৃষি কর্মকর্তারা।

এখন হাটে-বাজারে সরিষা বেচা-কোন চলছে। বগুড়ার দুপচাঁচিয়া ধাপের হাটে সরিষা বিক্রি করতে আসা কৃষক আকমল জানান, তারা গত সপ্তাহে অপেক্ষাকৃত কম শুকানো সরিষা ২৮০০ টাকা এবং শুকানো সরিষা ৩ হাজার থেকে ৩২০০ টাকায় কেনা বেচা হয়েছে। এবার সরিষা চাষে ভালো দাম পেয়ে খুশি তারা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print