বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মারধরের প্রতিবাদ করায় শাহীন আলম (৪০) নামে এক কৃষকের ৫ বিঘা জমির পেঁপে ও পেয়ারা বাগানে ব্যাপকভাবে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এতে প্রায় ৫০টিরও বেশি ফলন্ত গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার (৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের বিষ্ণপুর গ্রামে।
ভুক্তভোগী শাহীন আলম উপজেলার ক্ষুদ্রপীরহাটী গ্রামের মৃত আলেপ আলীর ছেলে। তিনি জানান, বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নিয়ে ৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পেঁপে ও পেয়ারা চাষ শুরু করেন। ইতোমধ্যে বাজারে কিছু পেঁপে বিক্রিও করেছেন, পেয়ারা গাছগুলোও অল্প দিনের মধ্যে ফলন দেবে এমন অবস্থায় ছিল।
ঘটনার সূত্রপাত হয় একই গ্রামের নাহিদ ইসলামের মারধরের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। জানা যায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বিষ্ণপুর চারমাথা বাজার এলাকায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে আবু তাহের নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করছিলেন নাহিদ। শাহীন আলম এসময় বিষয়টি থামাতে গেলে তাকেও মারধরের চেষ্টা করা হয় এবং পরবর্তীতে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেওয়া হয়।
এর জের ধরেই রাতের আঁধারে শাহীন আলমের বাগানে হামলা চালিয়ে পেঁপে ও পেয়ারা গাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন শাহীন। তিনি বলেন,“আমি ধার-দেনা করে এই বাগান করেছিলাম। এত বড় ক্ষতি করে দেবে, কল্পনাও করিনি। আমি ন্যায়বিচার চাই।”
তিনি এ ঘটনায় ধুনট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষ্ণপুর গ্রামের নাহিদ ইসলাম দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। চারমাথা বাজারটি তার বাড়ির পাশে হওয়ায়, অন্য গ্রামের কেউ এলেই নানা অজুহাতে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও মারধরের ঘটনা ঘটান তিনি। সম্প্রতি এক সংখ্যালঘু বৃদ্ধকেও প্রকাশ্যে অপমান করে চড়-থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের দাবি, “নাহিদকে এখনই থামানো না গেলে, ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে। পুরো এলাকা তার আচরণে অতিষ্ঠ।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম দাবি করেন, “আমি ডাব বিক্রির টাকা চাইতে গিয়েছিলাম, তখন ওরা আমাকে মারধর করেছে।”
ধুনট থানার ডিউটি অফিসার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচারের পাশাপাশি নাহিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
