বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নে যুবলীগকে সঙ্গে নিয়ে এক বিএনপি নেতা শামিম ড্রাইভার জমি ও পুকুর দখল, চাঁদাবাজি এবং এসআই জাহিদ মোটা অংকের টাকা দিয়ে ভুক্তোভোগীর ছোট ভাই ওয়াসিম হোসেনকে আওয়ামীলীগ সাজিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় শেরপুর প্রেসক্লাবে ভুক্তোভোগি পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী শামীম হোসেন, ওয়াসীমের স্ত্রী শ্যামলী খাতুন তার ছেলে জিম সরকার, রাহিম সরকার।
লিখিত বক্তব্যে শামীম হোসেন বলেন, আমার বাবা মৃত আব্দুল হাই গত ৩০ বছর ধরে বৈধভাবে জমি ক্রয় করে ভোগদখল করে আসছিলেন। এই জমির মধ্যে ৪ শতক জমি খানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি শামীম হোসেন ড্রাইভারের কাছে বিক্রি করে। গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর বিএনপির প্রভাব দেখিয়ে ওই নেতা ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় ৪ শতক জমি দখল করে একটি পাকা ভবন নির্মাণ করেন এবং ভুক্তোভোগী পরিবারের পুকুরটিও জোরপূর্বক দখল করেন।
তিনি আরো বলেন, শামীম ড্রাইভার জমির পূর্বের মালিকের ছেলে যুবলীগের নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মেনানকে ব্যবহার করে জমি পাওয়া যাবে মর্মে অভিযোগ তুলে। পরবর্তীতে মীমাংসার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মাতব্বরদের উপস্থিতিতে গোপালপুর মুক্তমঞ্চে সালিশ বৈঠক হয়, যেখানে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে রায় দেওয়া হয়। জমির বিষয় নিয়ে পূর্বের মালিকের ছেলে যুবলীগের নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মেনানকে দিয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।
সংবাদ সম্মেলনে শামীম আরও অভিযোগ করেন, এসআই আমিরুল অভিযোগের পেক্ষিতে তদন্তে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ ও হুমকি দেন এবং মৃত বাবার কবর নিয়েও অশালীন মন্তব্য করেন। পরবর্তীতে এসআই জাহিদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করার পর আবারও চাঁদা দাবি করা হয়। দাবি না মানায় এসআই জাহিদকে মোটা অংকের টাকার বিনিময় করে ভুক্তোভোগির পরিবারের ছোট ভাই ওয়াসিম হোসেনকে রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। পরে তাকে আওয়ামীলীগ সাজিয়ে ১১ জুলাই একটি রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে।
ভুক্তভোগী শামীম হোসেন বলেন, আমার ভাই কোনোদিন রাজনীতি করে নাই, দলীয় পরিচয়ও নেই। স্থানীয় সবাই জানেন, সে নিরীহ মানুষ। অথচ আজ তাকে রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে এবং আমরা শামীম ড্রাইভার ও এসআই জাহিদের হয়রানির শিকার হচ্ছি। দিনরাত আতংঙ্গে বসবাস করছি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার দাবি জানান।
এ বিষয়ে শামিম ড্রাইভার বলেন, চাঁদার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। পুকুরটি ১০ বছরের জন্য লিজ নিয়েছি তার প্রমানও আছে। ওয়াসিম হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি আমার সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই।
এ ব্যাপারে এসআই জাহিদ বলেন, শামিম ড্রাইভারের সঙ্গে টাকার বিষয় জানতে চাইল তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি কাউকে চিনিনা, এককাপ চা খায়নি। আসামি ধরতে ফোর্স নিয়ে গিয়ে ওয়াসিম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছি, ওয়াসিম কে তাকেও চিনিনা।
