মে ১৯, ২০২৪ ১১:২০ পিএম

৪ বছর পর সোয়াবিনকে না বলবে দেশ

বগুড়ায় সরিষা চাষে লক্ষ্যমাত্রাকে পিছনে ফেলে বিপ্লব ঘটিয়েছে কৃষকেরা

বগুড়ায় সরিষা চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে কৃষকেরা। কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রাকে পিছনে ফেলেছেন তারা । এখন দিগন্ত জোড়া হলুদ সরিষাক্ষেত। হলুদ চাদরে বিছানো সরিষা ক্ষেতে সরিষা চাষি ও মৌ-চাষীরা এ মুহুর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বগুড়ায় সরিষা চাষের বিপ্লব হওয়ায় দেশের সাতক্ষিরা, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা মধু সংগ্রহকারি চাষিরা বগুড়ায় এসে ডেরা বসিয়েছে। সরিষা ক্ষেতের কোল ঘেঁষে বসিয়েছে মৌমাছির বাক্স।

এবার কৃষি বিভাগ প্রথমে ২৭ হাজার ৫শ‘ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করে। সরিষা চাষ বেড়ে যাওয়ায় কৃষি বিভাগও উৎপাদনও লক্ষ্যমাত্রাও পরিবর্তন করে । দ্বিতীয় দফায় জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন করে ৩১ হাজার হাজার ৫শ‘ হেক্টর সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করে। দ্বিতীয় দফার সরিষার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন করে করার পর কৃষক সেই লক্ষ্যমাত্রাকে পিছু ফেলে জেলায় সরিষা উৎপাদন করেছে ৩৭ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, সরকার আগামী ৪ বছরের মধ্যে দেশে সোয়াবিন আমদানী শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে চায়।

এই কৃষি কর্মকর্তা জানান, ৪ বছরে দেশ সারিষায় স্বয়ং সম্পূর্ণতা লাভ করবে। এরপর বাংলাদেশ সোয়াবিনকে না বলবে। আামরা শুধু শিল্পে ব্যবহারের জন্য যত টুকু সোয়াবিন দরকার সেই টুকু আমদানী করা হবে। সারিষা ভোজ্য তেল হিসাবে ব্যবহারীত হবে । আগামীতে সরকার আর সোয়াবিন আমদানী বন্ধ করবে না। কৃষি মন্ত্রানালয় এটিকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছে।

তিনি বলেন, এতোদিন সোয়াবিন যা ব্যবসা করার করে নিয়েছে। আগামীতে যাতে সোয়াবিন আমদানী করতে না হয় সে পথে হাটছে কৃষি মন্ত্রনালয়।

তিনি আরো জানান, আগামী বছর ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে দেশে চাষের লক্ষ্যাত্রা নির্ধারন করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৩ হাজার মেট্রিক টন। আমরা আগের মত সরিষার যুগে ফিরে যাব। কৃষিতে দেশ মজবুদ ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে।

এদিকে সরিষা ক্ষেতকে ঘিরে মধু চাষীরও মধু সংগ্রহে দারুন ব্যস্ত। প্রতি কেজি মধু সাড়ে তিনশ‘ টাকায় বিক্রি করছে।

শাজাহানপুর উপজেলার আফজাল হোসেন জানান, বগুড়ায় এবার সরিষা চাষ বেশি হওয়ায় জেলার বাইরে থেকে অনেক চাষী বগুড়ায় এসেছে। মধু চাষী জানা সরিষার সময় ছাড়াও কালোজিরার মধু, লিচু ফুলের মধু খেসারীর ডালের মধুও তারা সংগ্রহ করে থাকে।

আগে সরিষা চাষীরা মনে করতো মৌমাছির ফলে তাদের সরিষার উৎপাদন কমে যাচ্ছে। কিন্তু মধু চাষীরা তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছে। সপ্তাহে ৫ থেকে ৭ মন মধু সংগ্রহ করছেন তারা। সরিষা ফুলে মৌমাছি পরাগায়ন ঘটায়। এতে সরিষার উৎপাদন বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণ।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print