বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, গাবতলী উপজেলার কৃষকের উঠানে টিনের চালে, যমুনার পারে প্রতিদিন শুকানো হচ্ছে লাল মরিচ। দারুন ব্যাস্ত সময় পার করছে মরিচ শুকানো কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা। ব্যাস্ত মশলা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
বগুড়ার মরিচের খ্যাতি দেশজুড়ে। জেলার এবার মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। সাড়ে ৩’শ কোটি টাকার শুকনা ও ২শ’ কোটি টাকার টোপা / কাচা মরিচ উৎপাদনের আশা করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা। টোপা / কাঁচা মরিচে শুকনা আকারে হিসাব করলে আড়াইশত কোট টাকা হবে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী কৃষি অফিসার ফরিদ উদ্দিন। সব মিলিয়ে এই মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৫ শ’ কোটি টাকার মরিচ পাওয়া যাবে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
যমুনা বেষ্টিত সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলের পাকা মরিচ গাছ থেকে উঠাতে ব্যাস্ত শত শত নারী-পুরুষ শ্রমিকরা। মরিচ নিয়ে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে বগুড়ায় মরিচের প্রধান উৎপাদন অঞ্চল সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলে। এছাড়া জেলার গাবতলী, সোনাতলা শাজাহানপুর ও ধুনটেও মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।
জেলায় এ বছর ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৫২৫ মেট্রিক টন। এবার ৭ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন শুধু শুকনা মরিচ পাওয়া যাবে বলে আশা করছ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
আর কাঁচা/ টোপা মরিচ পাওয়া যাবে ৫২ হাজার ৩৬৮ মেট্রিক টন। যা থেকে পাওয়া যাবে ১৮ হাজার ৫২৫ মেট্রিকটন শুকনা আকারে। শুকনা ও কাঁচা/ টোপা লাল মরিচ মিলিয়ে প্রায় ৫শ’ কোটি ৮৪ লাখ টাকার উৎপাদন হবে।
বাজারে এখন প্রতিকেজি শুকনা মরিচ সাড়ে ৩ শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান বাজারের চেয়ে মরিচের বাজার ঊর্ধ্বমূখী হয়ে যায় সেক্ষেত্রে হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
এ দিকে প্রস্তুত কোম্পানীগুলো মরিচ কেনার জন্য আগাম টাকা দিয়েছে। তারা ভালো জাতের মরিচ সংগ্রহ করতে সারিয়াকান্দির চরে ডেরা বেঁধেছে। কোম্পানীর লোকজন শুকনা মরিচ সংগ্রহে দারুণ ব্যাস্ত। সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর শুকিয়ে যাওয়া বালি পার হয়ে দুর্গম চর থেকে এসে সদরে আর মরিচ বিক্রি করতে হয় না। ক্রেতা কোম্পানীগুলো কৃষকের উঠান থেকে বস্তা ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে কষ্ট লাঘব হচ্ছে বলে জানান মরিচ চাষি আজিবর।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, মরিচের জন্য বিখ্যাত সারিয়াকান্দিতে বরাবরের মত এবছরও মরিচের আবাদ বেশ ভালো হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। মরিচ চাষের জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান এবং সহযোগীতা দেয়া অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।