বগুড়ার গাবতলীতে ব্যাপক অনিয়মের মধ্যে দিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। বুধবার সকাল থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে বগুড়ার গাবতলী, সারয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার পরিষদের নির্বাচন সকাল ৮ টায় শুরু হয়। সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা দুই উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চললেও গাবতলীতে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাবতলী উপজেলায় কয়েকটি কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই করে আনারস প্রার্থীর সমর্থকরা।
কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট পড়ার অভিযোগ আসতে থাকে। এছাড়াও নাড়ুয়ামালা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সিরাজুম ইসলাম নামে এক শিক্ষককে ও গাবতলী পৌর এলাকার পূর্বপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক ভোটার মো: কামাল (১৮) ছুরিকাহত হয়।
সকাল ১০ টার দিকে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও আনারস মার্কার প্রার্থী রফি নেওয়াজ খান রবিনের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক উপজেলার সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে এসে দ্বিতীয় তলার দুইটি ৪ ও ৫ নাম্বর বুথে পোলিং এজেন্টের কাছ থেকে ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে সিল মারেন। খবর পেয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফসানা রিমা ঘটনাস্থলে এসে ব্যালট পেপারে মুড়িতে ভোটারের স্বাক্ষর না পাওয়ায় ৬ টি মুড়ি জব্দ করেন। এই সময় সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার তারিকুল ইসলাম ও হাফিজুর রহমান দুইজনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ওই কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হাফিজুর রহমান জাল ভোটের দায় স্বীকার করে বলেন, ১০ থেকে ১৫ জন যুবক বুথে এসে ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে গোপন কক্ষে গিয়ে সিল মেরেছে। তাদের আমি চিনিনা।
প্রিজাইডিং অফিসার এটিএম আমিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না। আপনাদের কাছে খবর পেয়ে ব্যালট খুলে দেখি মুড়িতে ভোটদাতার সিল ও স্বাক্ষর নেই।
এদিকে বেলা ১২ টার দিকে রামেশ্বাপুর ইউনিয়নের কুসুমকলি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে প্রিজাইডিং অফিসার শাজাহান আলম ও আনারস মার্কা প্রার্থী রফি নেওয়াজ খান রবিনের এজেন্ট এরশাদ আলীকে আটক করেছে পুলিশ। প্রায় ব্যালটে সিল মারা ৯০০ টির মধ্যে ভাইস চেয়াম্যানের (পুরুষ ও মহিলা) ৬০০ ব্যালট উদ্ধার করা হয়। তবে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যালট পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার জানান, সন্ত্রাসীরা চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যালটে সিল নিয়ে বাক্সে ফেলে দিয়েছে। ব্যালট পেপার প্রিজাইডিং অফিসারের কাছ থেকে ভোট গ্রহনের পূর্বে নিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
জাল ভোটসহ তাদের আটক করা হয়৷ এছাড়াও প্রায় ৩০০ টি জাল ভোট বাক্সে ফেলানোর অভিযোগ স্বীকার করেছেন প্রিজাইডিং অফিসার শাজাহান আলম।
জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান বলেন, যেখানে অভিযোগ আছে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভোট গ্রহণ চলবে।
এদিকে ঘোড়া মার্কার প্রার্থী অরুন কুমার চক্রবর্ত্তী জানান , আনারস মার্কার সমর্থকরা ভোটাদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়েছে। তারা ভোট গ্রহণের পূর্বে ব্যালট সংগ্রহ করে জাল ভোট দিয়েছে। তার সমর্থকদের ছুরকাহত করেছে। তিনি এ সব অভিযোগ জেলা নির্বাচন অফিসারের নিকট দিয়েছে। তিনি মামলা করবেন বলে জানান। তিনি এই সকল ব্যাক্তিদের শাস্তি দাবি করেছেন । তার বিপক্ষ প্রার্থী আনারস প্রতিকের রফিনেওয়াজ খান রবিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অভিযোগ মিথ্যা।