মে ১৭, ২০২৪ ২:৪৭ পিএম

বগুড়ার বাজারে সকল পণ‌্যের দাম বৃদ্ধি, দিশেহারা ক্রেতারা

বগুড়ার কাঁচা বাজারে আগুন, দিশেহারা সাধারণ ক্রেতারা।
বগুড়ার কাঁচা বাজারে আগুন, দিশেহারা সাধারণ ক্রেতারা। ছবিঃ এনসিএন

জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে প্রভাব পড়েছে বগুড়ার সব ধরনের জিনিসে উপর। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র মানুষের ওপর চেপে বসেছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ঘোটক। জীবনধারণের উপযোগী প্রতিটি জিনিস যেন অগ্নিমূল্য। এমন অবস্থায় হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা।

মঙ্গলবার সকালে শহরের ফতেহ্ আলী বাজার ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ ক্রেতারা যেন এক দুশ্চিন্তা নিয়ে বাজার করছেন। অনেকে বলছেন, বাজার তালিকা আগের থেকে ছোট করতে হচ্ছে। আগের মত আর কিনা সম্ভব না। বাজারে সব কিছুর দাম বৃদ্ধি।

আজফারুল হাবিব শিষ একজন নার্সিং শিক্ষার্থী জানান, প্রতি সপ্তাহে বাজারে আছি। গত সপ্তাহের তুলনায় আজ সব কিছুর দাম বেশি। কাঁচা বাজার করতেই পকেট ফাকা হচ্ছে। মাছ, মুরগি, গরুর মাংসের দিকে তো তাকানোই যাচ্ছে না।

বাজার ঘুরে সকল ধরনের জিনিসের দোকানদারদের কাছে থেকে জানা যায়, গত ৩ দিন ধরে বাজারে কাঁচা বাজারের দাম থেকে শুরু করে সব ধরণের পণ্যের দাম বেশি।

বাজারে দিন দিন বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। আর তার সাথেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করলা, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, পটল, পেয়াজ, আলু, মাছ, মুরগি, গরুর মাংস ইত্যাদি‌ সব কিছুর দামই অসহনীয়। বাজারে এমন কোন পণ্য পাওয়া যাবে না যার দাম স্থিতিশীল বা কমছে।

গত সপ্তাহে কাঁচা বাজারে মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হলেও তা এখন বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ২৪০ টাকা দরে। বেগুন ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকা, পটল ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা, পেয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও করলা ৪০-৫০ থেকে বর্তমানে ৭০ টাকা দরে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চালের বাজারে সব ধরনের চালের দামের সাথে বেড়েছে কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা করে। বাজারে গত ৪ দিন আগে মিনিকেট চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছিল ৬৮ টাকা কেজিতে। তা এখন ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আটাশ ৫৫ টাকা কেজি থেকে বেড়ে ৫৮ টাকা কেজি, কাটারি চাল ৬৮ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা কেজি ও আটা ৪৪ টাকা কেজি টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ডিম কিনতে এসেছেনে ফিরোজা বেগম, কথা হয় তার সাথে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিসিনের দাম বৃদ্ধিতে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে সব কিছুরই দাম বেশি। চাহিদা অনুযায়ী আর কিনতে পারি না। দিনে যে ভাল মন্দ খাবার খাবো তা আর পারব না। বাচ্চাদের পুষ্টিসম্মত খাবার খাওয়াতে পারছি না।

ডিমের দাম ৩৮ টাকা থেকে বেড়েছে ৪৪ টাকা হালিতে শুধু তাই নয় ডিমের দামের পাশাপাশি মুরগির দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ১০ টাকা করে। সোনালী মুরগি ২৪০ কেজি থেকে বেড়ে ২৬০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে বেড়ে ১৬০ টাকা কেজি ও লেয়ার মুরগি ২৭০ টাকা কেজি থেকে বেড়ে ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

তবে বোতলজাত তেলের দাম আগের মত আছে। ১ লিটার ১৮৫ ও ৫ লিটারের বোতল ৯১০ টাকায়। তেলের বাজারে ক্রেতাদের তেল কেনার চাপ দেখতে পাওয়া যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে সব ধরনের জিনিসেই এর প্রভাব ফেলছে। আগে মোকাম থেকে যে খরচে মালামাল বাজারে ঢুকতো এখন তার থেকে বেশি খরচ হচ্ছে। আবার চাহিদা অনুযায়ী আড়ৎ থেকে মালামাল কিনতে পারছি না আর কিনতেও হচ্ছে বেশি দামে। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা বলছেন, বাজারে এমন পরিস্থিতিতে দিন দিন পণ্যের দামে উত্তাপ ছড়ালে বাজারে নিম্ন আয় ও খেটে খাওয়া মানুষের নাভিশ্বাস বাড়বে বলে মনে করেন।

এনসিএন/বিআর

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print