মে ১৭, ২০২৪ ৩:৫৯ পিএম

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে জিয়ার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বগুড়ার ৩ যুবক

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিশোধে ঝাঁপিয়ে পড়া বগুড়ার তিন যুবক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্যারাট্যুপার বীর মুত্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল খালেক খসরু, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নজিবুর রহমান নিহার, অ্যাডঃ বীরমুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকি। ছবিঃ এনসিএন
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিশোধে ঝাঁপিয়ে পড়া বগুড়ার তিন যুবক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্যারাট্যুপার বীর মুত্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল খালেক খসরু, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নজিবুর রহমান নিহার, অ্যাডঃ বীরমুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকি। ছবিঃ এনসিএন

১৫ই আগস্ট বাঙালী জাতির শোকের দিন। এই দিনে সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠে বাঙালী, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মম ভাবে হত্যা করেছিল পাকিস্তানিদের প্রেতাত্মারা।

আগষ্ট মাস বাঙালী জাতির আবেগের মাস। ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে আওয়ামীগকে নেতৃত্ব শুন্য করার সুদূর প্রসারী চিন্তা করেছিল তারা। যারা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে ভালোবেসেছিলো তাদের মধ্যে বগুড়ার তিন যুবক অস্ত্র হাতে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে মাঠে ঘাটে সহযোদ্ধা সংগ্রহ করে সামরিক বাহিনী জেনারেল জিয়ার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিল। শুধু বগুড়ায় নয় ১৫ই আগষ্টের পর এমনি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক যুবক জেনারেল জিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে স্বশস্ত্র প্রতিবাদ করতে গিয়ে শহীদ হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ বাঙালীর বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন আজীবন

আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিবাদী বগুড়ার তিন যুবক বগুড়া জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্যারাট্যুপার বীর মুত্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল খালেক খসরু, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নজিবুর রহমান নিহার, অ্যাডঃ বীরমুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকি ছিলেন। দেশের জন্য প্রফুল্লা চাকী, ক্ষুদিরামের মত বিপ্লবীরা ব্যার্থ অভ্যুত্থানকারি, ব্রিটিশ বিরোধীরা যুদ্ধ করে আজও ইতিহাসের আজও চিরস্মরনীয় হয়ে আছে। বাংলাদেশের প্রতিবাদি এসব যুবক আত্মাহুতি দিলেও তাদের নাম ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে গেছে। তাদের কোন চাওয়া ছিল না। তাদের একটাই চাওয়া বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নেয়া। ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে নিজেদের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছিলেন।

আব্দুল মতিন মহব্বত জানান, “তার ভাই খসরু বঙ্গবন্ধুকে এতাটাই ভাল বাসতো যে তিনি জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে জীবনের মায়া ত্যাগ করে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।”

এদের মধ্যে আর এক সাহসী যুবক শহীদ নজিবুর রহমান নিহার সরাসরি জিয়ার আনুগত্য সৈন্যদের চ্যালেঞ্জ জনিয়ে গোবিন্দগঞ্জে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করার সময় শহীদ হন। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর শহীদ নিহার শহরের রহমান নগরে একটি বাসায়  আত্মগোপন করেছিলেন ১৭ দিন। এরপর কোন রাতে তিনি ভাইপাগলা গোরস্থারে সামনে থেকে রাতের বাসে রওনা দেন। তার বুকে বঙ্গবন্ধুর হত্যার  প্রতিশোধের স্পৃহা দাউ দাউ করে জ্বলছিল। অবশেষে বিপথগামী সেনা সদস্যদের হাতে ১৯৯৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সরাসরি যুদ্ধে গুলিতে নিহারের বুক ঝাঁঝড়া হয়ে যায়। সেদিন গুলিতে বাংলার মেঠোপথ রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল। এই সময় এই জিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন তৎকালিন ডিসিএমএলএ ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহ।

আরো পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে জেলা পরিষদের আলোচনা সভা

শহীদ আব্দুল খালেক খসরু ছোট ভাই মহব্বত জানান, “খসরু সিরাজগঞ্জে কিছু দিনের জন্য বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকির সাথে ছিলেন। পরে তিনি সীমান্ত পার হয়ে ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি  বিএসফএফ’র হাতে আটক হন। ভারত থেকে তিনি সিরাজগঞ্জে আসেন। সেখানে জিয়া আনুগত বাহিনীর সদস্যদের খসরুর অবস্থান টের পায়। সেখানে তাকে হত্যা করা হয়। সেই সিরাগঞ্জের চরে তাকে দাফন করা হয়।”

রেজাউল বাকি ছিলেন নজিবুর রহমান নিহারে সাথে। সেনাবাহিনী তাকে সহ অনেককেই জীবন্ত ধরে ফেলে বিপথগামী সেনা সদস্যদের। পরে তারা সাধারন ক্ষমায় ছাড়া পান। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক প্রতিবাদি বগুড়ার ৩ যুবক বাঙালী জাতির গর্ব। আজও প্রতিবাদী যুবকদের কাছে আমাদের  অনেক ঋণ আছে। কেমনে শোধ করবে বাঙালী এই ঋণ।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print