মে ১৯, ২০২৪ ১২:৫২ পিএম

বিএনপির রাজনীতি করে টানা ৫ বার ইউপি চেয়ারম্যান, যোগ দিলেন ইসলামী আন্দোলনে

বগুড়ার শেরপুরের বিএনপি নেতা মো. শাহ আলম ওরফে পান্না। তিনি এবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিলেন। তিনি শেরপুর পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ৪১ বছর বিএনপির রাজনীতি করার পর কুসুম্বি ইউনিয়নের টানা ৫বার ইউপি চেয়ারম্যানে জয়লাভ করেছেন।  তাঁর সঙ্গে সাবেক এমপি জিএম সিরাজের পিএস, শেরপুর পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি আবদুল আজিজ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিয়েছেন।

আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শেরপুর উপজেলার বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির আয়োজনে উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের মহিপুর খেলার মাঠে ওয়াজ মাহফিলটি ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় এই ওয়াজ মাহফিলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন দলের বগুড়া কমিটির জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির আল্লামা আবদুল হক আজাদ। মাহফিলে শেরপুর উপজেলার অন্তত সাত হাজার দলীয় নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।  শেরপুর পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ জুয়েল বলেন,  শাহ আলমের পরিবার শেরপুরে বিএনপির রাজনীতিতে মূল শক্তি ছিল। তাঁর অন্য দলে এভাবে যোগদান ক্ষণিকের জন্য দলীয় কর্মীদের কাছে কষ্টের হলেও বৃহত্তর রাজনীতিতে এর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।

শাহ আলম ওরফে পান্না উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) পাঁচবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, তিনি ১৯৮৩ সালে ছাত্রাবস্থায় তিনি ছাত্রদলে যোগ দেন। ছাত্রজীবন শেষে বিএনপির শহর ও উপজেলা কমিটিতে ছিলেন। বেশ কয়েক বছর শেরপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সর্বশেষ তিনি উপজেলা বিএনপি কমিটির সদস্যপদে ছিলেন। শেরপুরে বিএনপির রাজনীতিতে তাঁদের পরিবার ছিল নেতৃস্থানীয়। শাহ আলমের বড় ভাই মো. জানে আলম (খোকা) শেরপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র। অষ্টম জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনে জানে আলম ছিলেন বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী।

অপর দিকে আবদুল আজিজ বগুড়া-৫ আসনের বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজের ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) ছিলেন। অন্তত ৩০ বছর তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

তাঁদের যোগদানের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেরপুর উপজেলা কমিটির সহসভাপতি মো. ইমরান খান বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ওই দুজন তাঁদের দলে যোগদানের পর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তাঁদের হাতে দলীয় প্রতীক হাতপাখা তুলে দেন। এর আগে ওই দুজন তাঁদের দলীয় ঘোষণাপত্রে সই করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহ আলম বলেন, ‘আমরা মুসলমান, ইসলামের পথে থাকতে হবে। এ জন্য আমি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলে যোগদান করলাম।’ বিএনপির চেয়ে ইসলামী আন্দোলনের আদর্শ ভালো বলে তিনি এ সময় দাবি করেন।

যোগদানকারী আবদুল আজিজ বলেন, ইসলামের পথে থাকতে হবে। এ জন্য আমি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলে যোগদান করলাম।

এ ব্যাপারে শেরপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ বলেন, শাহ আলমের পরিবার শেরপুরে বিএনপির রাজনীতিতে মূল শক্তি ছিল। এখানে বিএনপির রাজনীতি যখন শুরু হয়, তখন থেকেই এই পরিবার বিএনপির দলীয় আদর্শের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিকে শক্তিশালী করে তুলেছিল। তাঁর অন্য দলে এভাবে যোগদান ক্ষণিকের জন্য দলীয় কর্মীদের কাছে কষ্টের হলেও বৃহত্তর রাজনীতিতে এর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।

শেরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, শাহ আলম ওরফে পান্না সব সময় বিএনপিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করেছেন। এই দলবদল দলীয় রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না, বরং স্থানীয়ভাবে বিএনপি আরও শক্তিশালী হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print