অক্টোবর ১, ২০২৫ ১২:৪৬ এএম

ভূমি অধিগ্রহণের চেক হস্তান্তর করলেন ডিসি 

নওগাঁয় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অধিগ্রহণকৃত ভূমি ও স্থাপনার মূল্যের চেক হস্তান্তর শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল। 

এতে করে জেলা প্রশাসনের চেষ্টায় স্থাপনার মূল্য থেকে ১০ শতাংশ কেটে নেওয়ার জটিলতার অবসান হলো।

ফলে চেক পেয়ে খুশি ক্ষতিগ্রস্তরা। পর্যায়ক্রমে সকলকে দেওয়া হবে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল।

এদিন নওগাঁ সড়ক বিভাগাধীন ৩টি আঞ্চলিক ও ৩টি মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের সদর উপজেলাধীন নওগাঁ-বদলগাছী সড়ক নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণকৃত স্থাপনার মূল্য হিসেবে আল মামুনের হাতে ৪৭লাখ ২৪হাজার ৬৯৯টাকার চেক ও আ: রহমানের হাতে ৯৪লাখ ৮৭ হাজার ২৬৩টাকার চেক এবং জমির মূল্য বাবদ আব্দুল হাকিম মন্ডলের হাতে ২লাখ ৪৫হাজার ৪৮৭টাকার চেক তুলে দেয়া হয়। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: সোহেল রানা, জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে জেলার রাণীনগর উপজেলার আতাইকুলা গ্রামে ৫২শহীদের বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মালিক শ্রী ধ্রুব কুমার পালসহ দুইজনের মাঝে ১লাখ ২৬ হাজার ৬৪২টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। এবং মান্দা উপজেলার বিলশ্রীকলা ও নিয়ামতপুর উপজেলার অমরসিংহ মৌজায় শিব নদীর উপর নির্মিত ব্রীজের এপ্রোচ/একসেস সড়ক নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মালিক শ্রী মনোরঞ্জন সরকারের হাতে ১লাখ ৭২ হাজার ১৯৭টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।

আল মামুন ও আব্দুর রহমান নামে দুই ব্যক্তি স্থাপনার মূল্য বাবদ চেক পেয়ে খুব খুশি। তারা জানালেন, একটু দেরি হলেও সঠিক ভাবে যাচাই করে চেক দেওয়া উচিত। এতে করে ভবিষ্যতে কোন জটিলতা সৃষ্টি হবে না। এছাড়া সড়ক বিভাগ থেকে দেওয়া চিঠির কারণেই একটু দেরি হয়েছে। এই টাকা এখন প্রয়োজনীয় কাজে লাগাতে পারবো বলেও জানালেন তারা।

নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নুরে আলম সিদ্দিক বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন আশা করছি অসমাপ্ত রাস্তার কাজ খুব দ্রুত শেষ হবে। ইতিমধ্যে রাস্তার কাজ চলমান আছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল রানা জানান, প্রথমে একটু দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছিল। সেটার সমাধান হয়ে গেছে। আর ভূমি অধিগ্রহণের মালিকদের অনেক ঝামেলা আছে। কেউ কেউ অভিযোগ দিয়েছে, এমনকি আদালতে মামলা করেছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যা অনেক। তাই শুনানি করতে একটু সময় লাগছে। তবে প্রকৃত মালিকই যেন মূল্য পায় আমরা সেই বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান, ভূমি অধিগ্রহণের টাকা জেলা প্রশাসকের নিকট আসা মাত্রই প্রক্রিয়া শেষে মালিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়। কারণ জমির মালিকানা নিয়ে অনেক সমস্যা থাকে, অনেকে তার জমি বলে দাবি করে। তাই সঠিক ভাবে যাচাই বাছাই করতে একটু সময় লাগে। যাতে প্রকৃত মালিক তার নায্য প্রাপ্যটা সঠিকভাবে বুজে পায়। আশা করছি এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।

উল্লেখ, স্থাপনার মূল্য থেকে ১০শতাংশ টাকা কেটে নিতে নওগাঁ সড়ক বিভাগ জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেওয়ায় জটিলতা তৈরি হলে টাকা বুঝে পাচ্ছিল না ক্ষতিগ্রস্তরা। ফলে থমকে থাকে নওগাঁ-বদলগাছি আঞ্চলিক সড়কের ১০ কিলোমিটার প্রশস্থকরনের কাজ। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রশস্তকরণের এই কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু জায়গায় সড়কের পাশে থাকা ব্যক্তিমালিকানা জমি ও স্থাপনা পড়ে। এসব জমি ও স্থাপনার একটা নির্দিষ্ট মূল্য ধার্য করে অধিগ্রহণ করা হয়। প্রায় ৬৮০ জন জমি ও স্থাপনার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৬২ কোটি টাকা পাবে সংশ্লিষ্টদের কাছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print