বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান। সাতমাথায় চায়ের দোকানে চা খাওয়ার থেকে বেশি সময় ব্যয় করছেন মশা তাড়াতে। বেশ কয়েকবার মশা তাড়াতে ব্যর্থ হয়ে চা শেষ করে যত দ্রুত সম্ভব স্থান ত্যাগ করলেন তিনি।
মশার এমন যন্ত্রণা বেড়েছে বগুড়ায়। শহরের আনাচে কানাচে প্রায় সকল এলাকায় মশার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। মশার যন্ত্রণায় মাসখানেক ধরে অতিষ্ট বগুড়াবাসী। জলাশয়, নালা কিংবা ময়লা–আবর্জনার স্তুপ থেকে প্রতিনিয়ত জন্ম নিচ্ছে মশা। মশার ওষুধ ছিটানো কিংবা ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশা দমনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না বগুড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে।
আরো পড়ুনঃ ছাত্রদের অধিকার নিশ্চিতে কাজ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ: সজীব সাহা
সরেজমিন মশার উপদ্রব নিয়ে বগুড়া শহরের সাতমাথা, ঠনঠনিয়া, খান্দার, ঝাউতলা, টিনপট্টি, বড়গোলা, নামাজগড় সহ প্রায় শহরের সব এলাকায় একই অবস্থা দেখা গেছে। এলাকার জনগণের দাবি গত ছয় মাসেও পৌরসভার লোকজনকে দেখা যায়নি মশার ওষুধ ছিটাতে।
সদরের ঠনঠনিয়া, মালতীনগর এলাকার বাসিন্দা পারভীন জানান, “মশার যন্ত্রণায় বিকেল হলেই বাড়ির দরজা, জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। বাসায় বাচ্চারা সন্ধায় পড়তে বসলে পড়াশুনার শব্দ কম বরং মশা মারার শব্দ বেশি পাওয়া যায়। এমন সমস্যায় যদি পৌরসভা থেকে মশার ওষুধ ছিটানো হতো তাহলে বেশ সুবিধা হতো।”
শহিদুল ইসলাম নামে সেউজগাড়ির সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা একই অভিযোগ করে বসলেন তার এলাকা নিয়ে। তিনি বলেন, “প্রধান সড়কের পাশেই একটি আবর্জনার ডাস্টবিন করা হয়েছে। সড়ক থেকে আরো ২ হাত দূরে ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হলেও আশে পাশের মানুষ এবং ওয়ার্ড ভিত্তিক আবর্জনার ভ্যানে যারা আবর্জনা নিয়ে যান তারা ডাম্পিং স্টেশনের ভেতরে জায়গা থাকতেও প্রধান সড়কের উপরেই আবর্জনা ডাম্পিং করেন। এতে করে সড়ক ও আশেপাশের বাড়িগুলোতে ব্যাপক দূর্গন্ধ, মশা– মাছি এবং রোগের উৎপাত হয়। এ বিষয় পৌরসভার চোখে পড়েনা হয়তো।”
ব্যর্থ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায় রোগীরা অনেকে দিনের বেলা মশারী টানিয়ে শুয়ে আছেন। রোগীর বেডের পাশে বসে থাকা রোগীর স্ত্রী জামিলা খাতুন জানান, মেডিকেলে দিনের বেলাতেও মশা কামড়ায়। দিনে রাতে কোন সময় মশা নিধনে কোন ব্যবস্থা করে না হাসপাতাল থেকে।
বিষয়টি সম্পর্কে মেডিকেলের উপ–পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ নর্থ ক্যাপিটাল নিউজকে বলেন, “মশা নিধনের জন্য আমাদের নিজস্ব কোন ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়ে আমরা রোগীদের সেবা দিতে ব্যর্থ। তবে একান্ত জরুরি হলে পৌরসভাকে জানানো হয় তখন তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। এছাড়া তারাও নিজে থেকে আসে না।”
বগুড়া পৌরসভার বক্তব্য
বগুড়া পৌরসভার আলাদা করে মশা নিধনের কোন শাখা নেই। তবে পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা নর্থ ক্যাপিটাল নিউজকে জানান, “আমরা গতকাল (০৬ মার্চ) থেকেই ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মশা নিধনের কার্যক্রম শুরু করেছি। এখন তা পর্যায়ক্রমে চলছে।”
বিষয়টি নিশ্চিত হতে ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ সার্জিল আহমেদ টিপু নর্থ ক্যাপিটাল নিউজকে জানান, “আমি গতকাল থেকেই অফিসে অবস্থান করছি তবে সারাদিনেও মশা নিধন কার্যক্রম নিয়ে আমার কাছে কেউ আসেনি এবং এ কার্যক্রম আমার নজরেও আসেনি।”