অক্টোবর ১, ২০২৫ ২:০৯ এএম

‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র তাপস বাপী আর নেই

‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য তাপস বাপী দাস মারা গেছেন। ফুসফুসের ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে রোববার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

এই দুঃসংবাদটি রুপম ইসলাম তার সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে নিশ্চিত করেন। তার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সংগীতদুনিয়া।

হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।

১৯৭৬ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত প্রথম বাংলা স্বাধীন রক ব্যান্ড ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’। সত্তর থেকে নব্বইয়ের দশকে আধুনিক বাংলা গানের ধরন বদলে দিয়েছিল দলটি। এই দলের সবচেয়ে পুরনো সদস্যদের একজন তাপস দাস। যিনি সবার কাছে বাপী দা নামেই পরিচিতি।

তাপস দাস ১৯৫৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর একটি সাধারণ বাঙালি পরিবারে নারায়ণ চন্দ্র দাস এবং জ্যোৎস্না দাসের চতুর্থ পুত্র হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বয়স থেকেই বাপির সঙ্গীত জগতের যাত্রা শুরু হয়। তিনি তার মা জ্যোৎস্না দাসকে তার প্রথম গুরু বা শিক্ষক হিসেবে বিবেচনা করতেন।

স্ব-শিক্ষিত গিটারবাদক বাপি, তার কলেজ জীবনে এই ছয় তারের যন্ত্রের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করেন। ১৯৭৫ সালে গৌতম চট্টোপাধ্যায়, প্রদীপ চ্যাটার্জি, রঞ্জন ঘোষাল, বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায়, এব্রাহাম মজুমদার এবং তপেশ বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাপি রক ব্যান্ড ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র অংশ হন।

সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক (১৯৭৭), অজানা উড়ন্ত বস্তু বা অ-উ-ব (১৯৭৮) এবং দৃশ্যমান মহীনের ঘোড়াগুলি (১৯৭৯) এই তিন অ্যালবাম ভারতীয় রক মিউজিকের মাইলস্টোন। আশির দশকের গোড়ায় ব্যান্ড ছেড়ে নিজেদের কর্মজগতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সকলে, তবে ১৯৯৫ সালে ফের মুক্তি পায় মহীনের ঘোড়াগুলির ‘আবার বছর কুড়ি পরে’। এই অ্যালবামেরই গান ‘পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে’-যা আজকের জেনারেশনের কাছেও ততটাই জনপ্রিয়।

‘পৃথিবীটা নাকি’, ‘আমার প্রিয়া ক্যাফে’, ‘তোমায় দিলাম’, ‘মানুষ চেনা দায়’, ‘তাকে যত তাড়াই দূরে’, ‘হায় ভালোবাসি’, ‘ঘরে ফেরার গানে’র মতো বহু কালজয়ী গান দিয়ে সত্তরের দশকে বাংলা গানের জগতে বিপ্লব ঘটিয়েছিল মহীনের ঘোড়াগুলি। দুই বাংলার শ্রোতাদের কাছে সমানভাবে চিরস্মরণীয় এই ব্যান্ড।

এনসিএন/বিআর

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print