সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫ ১০:০৭ পিএম

নওগাঁ সরকারি কলেজে ভর্তি ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায়

মাইকে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা

Oplus_16908288
Oplus_16908288

নওগাঁ সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত ফি নেয়ার প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কলেজ প্রশাসনের। অভিযোগ কলেজের সেন্ট্রাল মাইকে ঘোষণা দিয়ে ওই কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুনায়েদ হোসেন জুনের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। 

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর ছাত্রদল নেতা জুনায়েদ হোসেন জুন কলেজের মুল ফটকের সামনে বিকেল ৩টা পর্যস্ত অবস্থান নেন। তবে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুল হক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

কলেজ সূত্রে জানা যায়- ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে আগামী রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ভর্তির সময়। যেখানে নিয়মিত ছাত্রদের জন্য ৩ হাজার ৪৯১ টাকা এবং ছাত্রীদের জন্য ৩ হাজার ২৫১ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। এছাড়া যেসব শিক্ষার্থীদের পাঠ বিরতী আছে তাদের জন্য আরো ১৫০ টাকা বাড়তি দিতে হবে।

স্থানীয় ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়- রোববার সকাল ৯টা থেকে কলেজে একাদশ শ্রেনীতে ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত ফি নেয়ার অভিযোগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কলেজের ভর্তি শাখায় গিয়ে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলেন কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুনায়েদ হোসেন জুন। পরে অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুল হক ও অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীরা তাকে বুঝিয়ে কলেজ চত্বরে নিয়ে আসেন। এসময় তার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর করে কলেজ প্রশাসন (কলেজের স্টাফ)। তবে মারধরের আগে কলেজের এক কর্মচারীকে কেউ মারধর করছে এসব কথা বলে ওই কলেজের সেন্ট্রাল মাইকে ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা দেয়ার পর কলেজ প্রশাসনের ১৫-২০ জনের একটি দল জুনায়েদ হোসেনের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। ঘটনার পর থেকে জুনায়েদ হোসেন হামলার বিচারের দাবীতে কলেজের মুল ফটের সামনে অবস্থান নিয়েছে। এবং ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দরা ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে অধ্যক্ষের সাথে আলোচনায় বসেন।

হামলার ঘটনার বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা হামলার ঘটনার প্রতিবাদ এবং বিচার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্র বলেন- কলেজের কলা ভবনের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। মাইকে ঘোষণা দেয়া হয় এক কর্মচারীকে মারধর করা হচ্ছে। কলেজ চত্বরে শহীদ মিনারের পাশে মারধরের হৈ-চৈ শুনা যাচ্ছিল। বেশ কয়েক মিনিট হৈ-চৈ হয়। পরে দেখি জুনায়েদ হোসেন ভাইকে মারধর করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী জুনায়েদ হোসেন জুন বলেন- কলেজে একাদশ শ্রেনী ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি নেয়া হচ্ছিল। যা পাশ্ববর্তী জেলাগুলোর তুলনায় প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা বেশি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কলেজ প্রশাসনকে ফি কমানোর অনুরোধ করেছিলাম। তারা বিষয়টা বিবেচনায় নিতে চায়। এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে বলা হয়। পরে অধ্যক্ষ স্যার আমাকে নিয়ে কলেজে চত্বরে শহীদ মিনারের দিকে নিয়ে আসেন। এসময় মাইকে ঘোষণা দিয়ে কলেজ প্রশাসন (কলেজের স্টাফ) আমার উপর স্ট্যাম্প, বাঁশ এবং লাঠিসোটা দিয়ে হামলা করে। এ ঘটনার অধ্যক্ষসহ সকল অভিযুক্তদের শাস্তির দাবী করছি। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবীতে কলেজের মুল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছি।

নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুল হক জানান- কলেজের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ফি বৃদ্ধি করতে পারবো। এ বছর ৫০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। যা থেকে কর্মচারিদের বেতন পরিশোধ সহ গরীব শিক্ষার্থীদের সহযোগীতা করা হয়।

তিনি বলেনে- সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জুনায়েদ ভর্তি শাখায় কক্ষে গিয়ে বসে ছিল এবং অতিরিক্ত ফি নেয়া হচ্ছে বলে সে জানায়। যেহেতু ওই কক্ষে মূল্যবান কম্পিউটারসহ মূল্যবা যন্ত্রপাতি ছিল। সেখানে বিশৃঙ্খলা হতে পারে জন্য প্রথমে তাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলি। সে কোনোভাবেই আমাদের কথা শুনছিল না। তখন কর্মচারীরা যেভাবেই হোক বের করে দিয়েছে। আমি শুনেছি কর্মচারীদের সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নাই। মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print