মে ১, ২০২৪ ১২:২৫ পিএম

মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে সফল দুই কৃষি উদ্যোক্তা

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ৩ নং খনগাও ইউনিয়নের শিমুলবাড়ি এলাকার কৃষক সমিরুল ইসলাম ও মুনজুর আলম। মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে সফল এই দুই উদ্যোক্তা।

মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা ব্ল্যাকবেরি ও সুইট বেরি জাতের তরমুজ ঝুলছে মাচার ফাঁকে ফাঁকে। তাদের এই মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন অনেকে। আগ্রহী হয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন কৃষি অফিস ও কৃষকদের কাছ থেকে। এতে করে জেলায় তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা, সৃষ্টি হচ্ছে কৃষি কর্মীদের কর্মসংস্থানের।

নিয়মিত পরিচর্যা ও পোকা দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে ফেরোমন ফাঁদ। ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে মাত্র দু মাসের মধ্যে ভালো ফলন পাওয়া যায়। ফেরমন ফাঁদে ব্যবহার করা হচ্ছে প্লাস্টিকের বয়াম। এটি কিছুটা ব্যয়বহুল। তবে অনেক কৃষক খরচ কমাতে ব্যবহার করছে কোমল পানীয়র বোতল। এতে করে খরচ কিছুটা কম হচ্ছে তাদের।

দুই বিঘা জমি জুড়ে ব্ল্যাকবেরি ও সুইটবেরি নামে দুটি জাতের তরমুজ চাষ করেছেন উদ্যোক্তা সমিরুল ইসলাম। ফলন হয়েছে বেশ ভালো। এখন অপেক্ষা শুধু বাজারজাতকরণের।

আরো জানতে চাইলে তিনি এনসিএনকে বলেন, আমি গতবারেও গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষ করছিলাম। কিন্তু সে বারে তেমন সফলতা পাইনি। অনেক টাকা লস হয়েছে। এবারে মনের আক্ষেপে মালচিং পদ্ধতিতে ব্ল্যাকবেরি ও সুইটবেরি এই দুটি জাতের তরমুজের চাষ করেছি। এবারে ফলন হয়েছে বেশ ভালো। আশা করছি এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হবে এবারে।

আরেক উদ্যোক্তা মুনজুর আলম এনসিএনকে বলেন, আমি একজন নিয়মিত তরমুজ চাষী। গত তিন বছর যাবৎ আমি গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষ করে আসছি। অসময়ে মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে ভালো দাম পাওয়া যায়। এ সময় বাজারে চাহিদা রয়েছে। এবারে আমি এক একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে, আশা করছি লাভ হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় এবারে প্রায় ২২ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষ হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে এ বছর তরমুজ চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের এত চাষ ছিল না। সেনগাঁও, খানগাঁও, হাজিপুর ও দৌলতপুর এলাকায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষ করছেন চাষিরা। ব্ল্যাক সুইট, ব্ল্যাকবেরি, মেহেরুন কিং, মেরিন কিং,এবং ওন্ডার জাত বেশি চাষ হচ্ছে এবারে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় মূলত মাটির রস সংরক্ষণের জন্য। যখন তাপমাত্রা বেশি থাকে তখন মাটির রস শুকিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সেচ খরচ কমাতে পলি মাল্চ অর্থাৎ মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন কৃষকরা। শীতকালেও মালচিং পদ্ধতির বেশ সুবিধা রয়েছে। অতিরিক্ত ঠান্ডায় মাটির তাপমাত্রা কমে যায়। সেক্ষেত্রে মালচিং এর যেই মালচিং পেপার ব্যবহার করা হয় সেটি মাটির তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে মাটির উর্বরতা ধরে রাখে।

এনসিএন/এসকে

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print