অক্টোবর ১৫, ২০২৫ ৫:৫৮ এএম

ক্ষুব্ধ নার্সারি মালিক ও কৃষকরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন

শাজাহানপুরে ‘সিয়াম সিডস’-এর নিম্নমানের মরিচবীজ বিক্রির অভিযোগ

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় ‘সিয়াম সিডস’ কোম্পানির নিম্নমানের মরিচের বীজ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। 

মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত নার্সারি মালিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

জানা যায়, উপজেলার মোস্তাইল এলাকার আশিক কৃষি নার্সারীর মালিক মোঃ আরিফুল ইসলাম গত আগস্ট মাসে কামারপাড়ার ফারুক নার্সারীর মালিক ফারুক হোসেনের কাছ থেকে ‘সিয়াম সিডস’ কোম্পানির প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মরিচবীজ ক্রয় করেন। পরবর্তীতে তিনি বীজ রোপণ করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে চারা উৎপাদন করেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরাও ওই নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করে তাদের জমিতে রোপণ করেন।

কিন্তু কিছুদিন পর কৃষকরা অভিযোগ করেন, এসব চারা থেকে উৎপন্ন মরিচগাছ অকালেই ফুল ধরছে, মিশ্র জাতের মরিচ উৎপাদন হচ্ছে এবং অনেক গাছ অজানা কারণে মারা যাচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয়, কোম্পানির সরবরাহকৃত বীজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের ছিল।

বিষয়টি জানার পর নার্সারী মালিক ফারুক হোসেনও বীজের মান খারাপ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে চারা তুলে ফেলার পরামর্শ দেন।

বর্তমানে আশিক কৃষি নার্সারীতে প্রায় ১০ লক্ষ অবিক্রিত চারা পড়ে আছে, যার ফলে মালিকের আনুমানিক ৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি হতে পারে বলে দাবি করেন। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকরাও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, যার পরিমাণ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত নার্সারি মালিক মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, “আমি আমার সারা বছরের পুঁজি ও কিস্তিতে টাকা তুলে চারা উৎপাদন করেছি। এখন সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ— এই প্রতারণার সঠিক তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

অভিযোগের বিষয়ে সিয়াম সিডস-এর সত্বাধিকারী ফারুক হোসেন বলেন, “আশিক কৃষি নার্সারীর মালিক আরিফুল ইসলাম আমার নিজের দুলাভাই। এ বছর বীজে কিছু সমস্যা হয়েছে। এজন্য আমি তাকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি।”

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনা খাতুন বলেন, “সিয়াম সিডসের বিরুদ্ধে আবারও একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় বেশ কয়েকজন কৃষক বলেন, “এভাবে নিম্নমানের বীজ বিক্রি চলতে থাকলে কৃষকরা ধ্বংস হয়ে যাবে। কৃষি অফিসের কঠোর নজরদারি জরুরি।”

প্রান্তিক কৃষকদের ক্ষতি পূরণ ও ভবিষ্যতে এমন প্রতারণা রোধে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তারা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print