ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

শেরপুরে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে মাদ্রাসাছাত্রীর আত্মহত্যা

ছবি প্রতীকী
ছবি প্রতীকী

বগুড়ার শেরপুরে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে আদুরী খাতুন (১৪) নামের এক শিক্ষার্থী কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (২৪ এপ্রিল) শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

জানা যায়, আদুরী শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের আবু হানিফের মেয়ে। তিনি খামারকান্দি বালিকা দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিলেন।

নিহত আদুরীর মামা আব্দুর রহিম জানিয়েছেন, গেল কয়েকদিন ধরেই মাদরাসায় আসা-যাওয়ার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করছিল স্থানীয় এক যুবক। এর প্রতিবাদ করলে আদুরীর ওপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সে। এমনকি আদুরীর একটি ছবি সংগ্রহ করে সেটি এডিটিং করে অশ্লীল ছবি বানিয়ে আদুরীকে দেখানো হয়। সেই সঙ্গে ওই বখাটের সঙ্গে সম্পর্ক না জড়ালে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। শুধু তাই নয়, তাকে আত্মহত্যা করতেও প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিলো বলেও জানান নিহতের মামা আব্দুর রহিম।

অভিযোগে জানা যায়, শেরপুরের খামারকান্দি গ্রামের এই এলাকার বাসিন্দা এন্তাজ আলীর ছেলে আবু মুছা (২০)। তিনি পেশায় একজন চা বিক্রেতা হলেও ভিডিও এডিটিংয়ে বেশ দক্ষ ছিল সে। মুছা মাল্টিমিডিয়া নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) একটি আইডি আছে তার। আর সেই আইডি ব্যবহার করে ওই মাদরাসাছাত্রীর অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে প্রেমের সম্পর্ক গড়তে এবং একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করে মুছা। পরে বিষয়টি উভয় পরিবারে জানাজানি হলে এসব থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয় মুছাকে। এরপরও বিয়ের জন্য আদুরীকে গোপনে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে সে। কিন্তু আদুরীর পরিবার রাজি না থাকায় তাকে ভিন্নপথ বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেয় মুছা।

নিহতের পরিবারের দাবি, আদুরী যে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছে সেই বিষ সংগ্রহ করে দিয়েছিল মুছা। তবে বিষয়টি নিয়ে মুছার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

চলতি মাসের ১৭ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে নিজ শয়নকক্ষে কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে আদুরী। পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তাকে দ্রুত স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাতে মারা যায় আদুরী।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এক মাদ্রাসাছাত্রীর আত্মহত্যার খবর পেয়েছে। এ নিয়ে তার পরিবার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। তাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখছি। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

শজিমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নিহতের মৃত্যুর কারণ জানতে হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print