ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

১২০ টাকায় সোনার হরিণ পেলেন ৯৪ জন নতুন পুলিশ কন্সটেবল

বগুড়ায় কন্সটেবল পদে পুলিশ বাহিনীতে যোগ হলো নতুন ৯৪ জন। ছবিঃ এনসিএন
বগুড়ায় কন্সটেবল পদে পুলিশ বাহিনীতে যোগ হলো নতুন ৯৪ জন। ছবিঃ এনসিএন

ট্রেইনি রিক্রুট কন্সটেবল (টিআরসি) পদে ২০২২ সালে বগুড়া জেলায় ৯৪ জন নতুন প্রার্থী কন্সটেবল পদে চাকরি পেলেন।

আজ বুধবার বগুড়া পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে রাত ১০ টায় কন্সটেবল পদে ফলাফল ঘোষণা করেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।

কন্সটেবল পদে এবছর শারীরিক মেধা অনুসারে উত্তীর্ণ হন ৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ জন এবং নারী প্রার্থী ১৪ জন। যারা মাত্র ১২০ টাকা খরচ করে কোন রকম বাড়তি খরচ এবং অবৈধ লেনদেন ছাড়াই নিজেদের মেধা শারীরিক যোগ্যতার ভিত্তিতে কৃতকার্য হন।

বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, “মাত্র ১২০ টাকা খরচ করে এই ৯৪ জন সোনার হরিণ পেলেন। যারা শুধু মাত্র শারীরিক এবং মেধার যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দালাল প্রতারক চক্রকে দমন করার চেষ্টা করেছি এবং সক্ষম হয়েছি। সুষ্ঠু, স্বচ্ছ সুন্দরভাবে নিয়োগ পরীক্ষা আমরা সম্পন্ন করেছি। এর মধ্যে যারা আজকে কৃতকার্য হলেন তাদের বেশির ভাগই দুস্থ, অসহায় এবং হতদরিদ্র পরিবারের। মাননীয় ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ . বেনজির আহমেদ স্যার যে মিশনটি নিয়েছিলেন যে শতভাগ সচ্ছতার মধ্য দিয়ে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা হবে এবং যে ট্যাগ লাইন আছে “চাকরি নয় সেবা”। এটি আমরা প্রমাণ করার জন্যই দিনের পর দিন কাজ করে যাচ্ছি। আমি আজ কিছুটা আবেগ আপ্লুত কারণ একটি ভালো কাজ করলে একটু সন্তষ্টি থাকে। আমরা মনে করি আমরা আমাদের লক্ষ পূরণ করতে পেরেছি।

এবারের মেধা তালিকায় পুরুষদের সংখ্যা বেশি এবং নারীদের সংখ্যা কম। গত ২৯ মার্চ মাত্র একশ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করে বগুড়া পুলিশ লাইনে  হাজার ২৬০ জন ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন ধাপ শেষ করে ৯২৫ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে  ২৫৬ পাশ করেন। এরপর মৌখিক পরীক্ষা শেষে ৮০ জন পুরুষকে চূড়ান্ত এবং ১৪ জন নারীকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করে ফল প্রকাশ করা হয়।

মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়া পুরুষদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন শিবগঞ্জের কিচক এলাকার কৃষক হারুন অর রশিদের ছেলে রাব্বী হাসান। তিনি জানান, “গত বছর সময়ে আমি এই পদে পরীক্ষা দিয়ে বাদ পড়েছিলাম। কিন্ত এবার আমার মধ্যে জেদ চাপে এবার আমি উত্তীর্ণ হবো। আমার বাবা একজন কৃষক। এই চাকরির মাধ্যমে আমার বাবামা এবং প্রতিবন্ধী বোন ও ছোট ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি।

নারীদের মধ্যে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন সুমাইয়া আক্তার। তিনি আবেগ ভরা কন্ঠে জানান, “আমার বাবা একজন প্রতিবন্ধী। তিনি কাজ করতে পারেন না। আমাদের অভাবের সংসার। ছোট ভাই পড়াশুনা করলেও অভাবের কারণে সে পড়াশুনা ছেড়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালায়। আজকে এই অভাবের মধ্য দিয়ে জেদের বসে পড়াশুনা করে আমি উত্তীর্ণ হয়েছি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুররশিদ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলামনওগাঁ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবতাবউদ্দিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজল খুদাসহ জেলার অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print