ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৪:১৬ অপরাহ্ণ

লালমনিরহাটে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষ করে সফল নারী উদ্যোক্তা ময়না বেগম

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বাণিজ্যিকভাবে ভাবে সুপারী বাগানে বস্তায় আদা চাষ করে সফল নারী উদ্যোক্তা ময়না বেগম। বস্তায় আদা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। তার ইচ্ছা সুপারির বাগানে বস্তায় আদা চাষে নারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করবেন। তাকে দেখে এখন অনেক কৃষক এ পদ্ধতিতে আদা চাষে আগ্রহী হবেন বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।

আদা একটি লাভজনক চাষাবাদ। সঠিক পরিকল্পনায় চাষাবাদ করলে ২ থেকে ৩ গুণ লাভ হতে পারে। পাশাপাশি ছায়া জমি বা যে জমিতে অন্য ফসল হয় না, সেই জমিতেও আদা চাষ করা সম্ভব। বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা চাষ কৃষকের কাছে একটি নতুন ধারণা। এভাবে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন কৃষি বিভাগ। এ পদ্ধতিতে আদা চাষ যেমন চাহিদা মেটাতে পারবে, একইভাবে কৃষকও লাভবান হবেন।

ময়না বেগম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার উত্তর গোতামারী এলাকার আজম আলী এর স্ত্রী।

তিনি বলেন, আমি আনসার ভিডিপি’র মৌলিক প্রশিক্ষনে অংশগ্রহন করি সেখানে একদিন কৃষি অফিসার প্রশিক্ষন দেন সুপারী বাগানে বস্তায় আদা চাষ করা যায়। আমার বাগানে অনেক ফাঁকা জায়গা আছে, এগুলো অব্যবহৃতই থাকে। এই ফাঁকা জায়গা ব্যবহারের চিন্তা থেকে অবসর সময়ে বাড়ির পাশে সুপারি বাগানে বাড়তি কোনো ফসল ফলানো যায় কিনা তা নিয়ে ভাবতে থাকেন। এক পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেই। পরে সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে ৩০ শতক জমিতে বস্তায় আদা চাষ শুর“ করি। এখন পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচের বিপরীতে আদা চাষে প্রায় তিন লক্ষ টাকা আয়ের আশা করছেন।

ময়না বেগম আরো বলেন, আদা চাষে পরিমাণ মতো জৈব ও রাসায়নিক সার এবং দানাদার কীটনাশক বেলে দো-আঁশ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে বস্তায় ভরেছেন। প্রত্যক বস্তায় তিনটি করে আদার গাছ আছে। সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে সারিবদ্ধভাবে রেখেছেন এক হাজার আট শত বস্তা। সাধারণভাবে আদা চাষের চেয়ে এই পদ্ধতিতে ফলন বেশি হবে। আমি আশা করছি এই পদ্ধতিতে লাভবান হতে পারব। আমি প্রথম এই পদ্ধতিতে আদা চাষ শুরু করেছি। এ অঞ্চলে প্রত্যেক কৃষকের সুপারি বাগান আছে। আমি সফল হলে অন্যান্য নারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করব। আমার ৩০ শতাংশ জমির সুপারির বাগানের ভিতর বস্তায় আদা চাষ করতে খরচ হয়েছে পঞ্চাশ হাজার টাকা। ৩৫ হাজার টাকার বীজ আদা কিনেছেন এবং জৈব ও রাসায়নিক সারসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ইত্যেমধ্যে তিনি ৩৫ হাজার টার আদা বিক্রয় করেছেন। আশা করছি ভালো লাভ পাব। এখনও তিনি তিন লক্ষ টাকার আদা বিক্রয় করতে পারবেন বলে আশাবাদী।

ময়না বেগমের ছেলে শ্রেষ্ঠ বলেন, আমার মা আদা এবং চুইঝাল চাষ করে আমাদের পড়াশোনার খরচ চালান,আমরা দুই ভাই ঢাকায় পড়াশোনা করি। সব খরচ মায়ের কৃষি থেকে আসে।

হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন মিয়া বলেন, উপজেলার অনেকেই এখন বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ করছে। আশা রাখছি, সুপারী বাগানে বস্তায় আদা চাষীগণ শতভাগ সফল ও লাভবান হবেন। কৃষি অফিস থেকে তাদের সকল প্রকার সহায়তা করা হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print