ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ

নওগাঁয় থানা হেফাজতে রাখা ট্রাংকের পাশে পড়েছিল এইচএসসি প্রশ্নপত্র : তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

নওগাঁর ধামইরহাট থানা হেফাজতে থাকা ট্রাংক ভেঙে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদিয়া আফরিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার বিকালে তা জানাজানি হয়। আর শুক্রবার এ ঘটনায় জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এদিন রাত সাড়ে ৭ টার দিকে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে বলে মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন তদন্তকারী দলের প্রধান।

এদিকে থানা হেফাজতে থাকা এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র রাখার একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেই ছবি থেকে দেখা যায়, ধামইরহাট থানা হেফাজতে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার জন্য প্রশ্নপত্র রাখা হয়েছে একটি সিলগালা করা ট্রাংকের মধ্যে। যার দুটি তালা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এতে রাখা রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের ইসলামের ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের একটি

সেটের কয়েকটি ছেড়া ও কয়েকটি ভালো অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে।

এবিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল মালেক গণমাধ্যমকর্মীকে বলেন, গত ২৪ এপ্রিল রাতে উপজেলার বড়থা বাজারে দুর্বৃত্তের হামলায় উজ্জল হোসেন নামে একজন ছাগল ব্যবসায়ী নিহত হয়। এই মামলার আসামি বংশিবাটি এলাকার সাগর হোসেনকে আটক করে মঙ্গলবার রাতে থানায় আনা হয়। পরে তাকে থানা হেফাজতে রাখলে হাতে হাতকড়া থাকাকালীন সময়ে সে ট্র্যাংকে থাকা প্রশ্নপত্র গুলো বের করেন। তবে কতগুলো প্রশ্নপত্র চুরি হয়েছে অথবা প্রশ্নপত্র চুরির কোন তথ্য সাংবাদিকদের দিতে পারেনি তিনি।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন জানান, আমি বৃহস্পতিবার ঢাকায় ছিলাম। আমার পরিবর্তে শহরের কে.ডি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিটিংয়ে ছিলেন। সেখানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সার্কেলসহ আমাকে তদন্তের ভার দেয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে জেলা প্রশাসক স্যারকে তদন্ত প্রতিবেন জমা দেয়া হবে।

জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদিয়া আফরিন মুঠোফোনে বলেন, এঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। তবে তদন্ত প্রতিবেন জমা দেওয়ার যদিও নির্দিষ্ট কোন তারিখ দেওয়া হয়নি। তারপরও যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত প্রতিবেন জমা দেওয়া যায় সেলক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল গণমাধ্যমকর্মীকে বলেন, থানা হেফাজতে থাকা এইচএসসি পরীক্ষার লকার বাক্সের ভেতর থেকে প্রশ্নপত্র চুরির কথা জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রশ্নপত্রের বাক্সের তোলা কোনোভাবেই খোলা থাকার কথা নয়। এটাতো একটা অঘটন ঘটেছে। এছাড়া বাক্স থেকে প্রকৃত পক্ষে কোনো প্রশ্নপত্র চুরি হয়েছে কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে। প্রশ্নপত্র চুরি বা ফাঁসের ঘটনার যে বা যাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলবে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আ্ইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যে প্রশ্নপত্র চুরি বা ফাঁস হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে তা ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের। বিষয়টি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের প্রধানকে জানানো হয়েছে। শনিবার শিক্ষাবোর্ডের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে জানান তিনি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print