নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মিত ইটের দোকানঘর ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পারইল ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান জাহিদ। রোববার দুপুরে উপজেলার পারইল ইউনিয়ন পরিষদ প্রঙ্গনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার পারইল উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মিত ইটের দোকানঘর ও অন্যান্য স্থাপনা ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান জাহিদের নেতৃত্বে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে।
সংবাদ সম্মেলনে ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান জাহিদ দাবি করেন- পারইল উচ্চ বিদ্যালয়ের এ্যাডহক কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র সাহা আইন বহির্ভূতভাবে বিদ্যালয়ের গ্যারেজের জায়গায় দোকানঘর নির্মাণ করছিলেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দোকানঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও তাদের লোকজন বৃহস্পতিবার আবার দোকানঘর নির্মাণ করার চেষ্টা করলে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা দোকানঘরের ইটের দেয়াল ভেঙে দেয়। আর নামাজের ওয়াক্তা খানায় কোন ভাঙচুরের ঘটনায় ঘটেনি।
লিখিত বক্তব্যে ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ বলেন, গত ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর আমাকে জড়িয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় অসত্য সংবাদ প্রচার করা হয়েছে যা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। বিদ্যালয়ের নির্মিত দোকানঘর ও নামাজের ওয়াক্তা খানা আমি বা আমার কোন লোকজন ভাঙচুর করেনি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির যে অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে তাও সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, পারইল উচ্চ বিদ্যালয়ের এ্যাডহক কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও কমিটির অন্যরা এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র সাহার যোগসাজসে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এলাকার একজন ব্যক্তিকে বিদ্যালয়ের গ্যারেজের জায়গায় ইটের দোকানঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছিল এবং বিদ্যালয়ে কোন অ্যাসেম্বিলি হয় না বলে এলাকার লোকজন আমাকে বার বার মৌখিকভাবে অভিযোগ দিচ্ছিলেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমি গত ৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে বিদ্যালয়ে যাই। সেখানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্যদের কাছে জানতে চাইলে তারা কিছুই বলতে চাচ্ছিল না। এরপর বিষয়টি আমি উপজেলা প্রশাসনকে জানালে ও বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বিলি না হওয়ার প্রতিবাদ করলে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিজেরা বাঁচতে আমার উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা, আমাকে হয়রানি করা এবং সমাজে আমার মানক্ষুন্ন করার জন্য নানান মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।
দ্রুত বিদ্যালয়ের জায়গায় দোকানঘর নির্মাণ ও অ্যাসেম্বিলি না হওয়ার বিষয়ে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সময় স্থানীয় মেহেদী হাসান, আসলাম হোসেন, এরশাদ হোসেন, আনারুল ইসলাম, তোফাজ্জল হোসেনসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তোলা চেয়ারম্যানের অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র সাহাকে একাধিকবার ফোন এবং ক্ষুদে বার্তা দিয়েও কোন সারা বা বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয়ের এ্যাডহক কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, দোকানঘর ও নামাজের ওয়াক্তাখানা ভাংচুরের দিনে আমি উপস্থিত ছিলাম না। তবে লোক মারফতে শুনেছি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে লোকজন ভেঙ্গে দিয়েছে। এছাড়া টাকার বিনিময়ে যোগসাজসে দোকানঘর নির্মাণ করে দেওয়ার বিষয়ে চেয়ারম্যান যে অভিযোগ তুলেছেন তা সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি।