ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ

দলের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে ব্যাকডেটে স্বাক্ষর

সান্তাহার স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি রুবেল বহিষ্কার, এলাকায় মিষ্টি বিতরণ

বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুবেল হোসেনকে পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নওগাঁ শহরের তাজের মোড় এলাকা থেকে প্রায় ৭কেজি গাঁজাসহ তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।

ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে বহিষ্কার দেয়া নিয়ে দলটির মধ্যে নাটকীয়তা শুরু হয়। ঠিক কয়েকঘন্টা পরেই (৭ আগষ্ট) ব্যাকডেটের একটি বগুড়া জেলা কমিটির প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া বহিষ্কারাদেশ পত্র প্রকাশ হয়। এতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এক শ্রেণির নেতাকর্মীসহ জনসাধারণের মাঝে।

জানা যায়, সোমবার সকাল ১০টায় নওগাঁ শহরের তাজের মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এসময় ৫টি প্যাকেট ৬ কেজি ৯৭৮ গ্রাম গাঁজা উদ্ধারসহ সান্তাহার পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুবেলকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। তাকে গ্রেপ্তারের পর পর দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় তড়িঘড়ি করে বহিষ্কার দেয়া হয়েছে। বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া একটি বহিষ্কারাদেশ পত্র সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল সান্তাহার পৌর শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি রুবেল হোসেনকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে আজীবন বহিস্কার করা হলো। সেইসঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের তার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ না রাখার নির্দেশ প্রদান করাও হলো। যেখানে গত মাসের ৭আগষ্ট এক মাস ৮দিনের একটি ব্যাকডেটে বহিষ্কার পত্র দেয়া হয়েছে। অথচ দলটির বিভিন্ন কার্যক্রম সামাজিক মাধ্যমে দেখা গেলেও সেই বহিষ্কার পত্র ইতিপূর্বে কোথাও দেখা যায়নি। যদিও বহিষ্কার পত্র এক মাস আগে দেয়া হয়েছে তারপরও তাকে দলটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। চলতি মাসের ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে তাকে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সঙ্গে দলীয় ব্যানারে সামনের সারিতে তিনি অংশগ্রহণ করেন। এবং গত মাসে ৩১ আগষ্ট তাকে নিজের ফেসবুক আইডিতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নিজের পদ পদবিসহ শুভেচ্ছা দিতেও দেখা যায়। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের মাঝেও নানান গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যারফলে এই বহিষ্কারাদেশ দেখে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই? এদিকে তার গ্রেপ্তার ও বহিষ্কারের খবর পেয়ে পৌর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্থানীয় জনসাধারণরা মিষ্টি বিতরণ করেছেন।

রুবেলকে বহিষ্কার বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার মুকুল জানান, অনেক আগেই তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মী রুবেলের ৩১ আগষ্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর দলীয় প্রোগ্রামে অংশ নিতে দেখা গেছে জিজ্ঞেসা করতেই তিনি উত্তরে বলেন আমরা তাকে কোন প্রোগ্রামে দেখিনি।

উল্লেখ্য, প্রায় ৫মাস আগে তাকে বিএনপির সহযোগী অঙ্গসংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক দলের সান্তাহার পৌর শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি সান্তাহার পৌর শহরের হলুদঘর মহল্লার চুন্নু মিয়ার ছেলে। বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার মুকুল ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শুভ’র স্বাক্ষরিত পত্রে তথ্যটি পাওয়া যায়। স্থানীয়রা বলছেন ওই সময়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিশেষ সুপারিশে তাকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছে। অনেকেই তার কাছে গোপনে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পায় বলে জানা গেছে। অথচ সুবিধা না দিতে পারা অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন দলে থাকার পরেও পদ পদবি থেকে বঞ্চিত হয়ে আছেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পদ পদবি না পাওয়া নেতাকর্মীরা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print