বগুড়ায় নির্দেশনা ছাড়াই সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন বাস মালিকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ঘর থেকে বের হয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
শনিবার সারাদিন বগুড়ার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায় আগের তুলনায় সড়কে গণপরিবহন চোখে পড়ার মত না। এমন কি বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ড গুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভীড়।
এসব স্থানগুরো ঘুরে জানা যায়, বাস চালকদের দাবি সব ধরনের তেলের বৃদ্ধিতে এমন পরিস্থির সৃষ্টি হয়েছে। বেশি টাকা ব্যায় করে তেল তুলতে হচ্ছে, সেখানে আগে নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রী নেওয়া সম্ভব নয়।
ঢাকা থেকে বগুড়ার বনানী মোড়ে বাস নিয়ে আসলে কথা হয় বাস চালক সাজু মিয়া সাথে, তিনি জানান, তেল বেশি দামে কিনে আগের ভাড়ায় যাত্রী নিয়ে আসলে বড় ধরনের লসের শিকার হতে হবে এবং যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া বেশি চাইলে ঝগড়া-মারামারি সম্মূখীন হতে হচ্ছৰ এ সময় ধাক্কাধাক্কি ও ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। । তাই সে ভাড়া নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ও তেলের দামের সমন্বয় করে ভাড়া না বাড়ানো পর্যন্ত বাস বন্ধ রাখবেন।
এদিকে বড় ধরনের বিপাকে পড়েছেন মোটরসাইকেল চালকরা। তারা জানান, হুট করে লিটার প্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা বাড়ানো টা কোন ভাবেই মেনে নেওয়ার মত না। মাত্র ৪০-৪৫ কিলোমিটার রাস্তায় মোটরসাইকেলে খরচ করতে হচ্ছে ১৫০ টাকার মত। আবার কেউ কেউ বলছেন, মোটরসাইকেল বিক্রি করে একটি সাইকেল কিনবেন। আবার কেউ বলছেন, মোটরসাইকেলে চার্জার মোটর লাগিয়েও ঘুরবেন। বগুড়ার শহরে আজ অনেক কম দেখা গিয়েছে মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল।
ফিলিং স্টেশন গুরো ঘুরে দেখা জানা যায়, আগের মত আর তেল নিতে কেউ আসছে না। মোটরসাইকেল গুলি তো খুবই কম।
মাটিডালী বিমান মোড়ে দাড়িয়েছিলেন আমজাদ হোসেন নামের এক বৃদ্ধ। মাথায় ব্যাগ নিয়ে বাস না পেয়ে প্রায় ২ ঘন্টা যাবৎ দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বাস না পাওযায় অন্য যানবাহনে যাওয়ার চেষ্টা করলেও অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ায় যেতে পারছেন না তিনি।
এদিকে বাস চলাচল ও ভাড়া বৃদ্ধি বিষয়টি সম্পর্কে বগুড়া বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়াতে বিভিন্ন রুটের আংশিক বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। নতুন ভাড়া নির্ধারণ না করে যাত্রীদের সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, সরকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই জ্বালানীর দাম বাড়িয়েছে। একলাফে জ্বালানির দাম বেড়েছে লিটার প্রতি ৩৫ টাকা করে। এতে আমরাও কিছুটা বিপাকে পড়েছি। এখন পরিবহন খাত নিয়ে সরকার কি ধরনের সিদ্ধান্ত দিবে, সে অপেক্ষায় আছি বলেও জানান তিনি।
বাস ভাড়ার সাথে তেলের দাম সমন্বয় করার বিষয়ে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বাস ভাড়ার সাথে তেলের দাম সমন্বয় করা হলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে জনগন। শুধু তাই নয়, লোকসানের মুখে পড়বে পরিবহন মালিকেরাও।’
এর আগে, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। গত শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে তেলের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়, বিশ্ববাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করতেই ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল এবং অকটেনের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, ডিজেল ও কেরোসিনের লিটার ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেনের লিটার ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রোলের লিটার ৮৬ থেকে করা হয়েছে ১৩০ টাকা। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম কার্যকর হয়েছে।
এনসিএন/ বিআর
