অনাবৃষ্টিতে আমান ক্ষেত পানি শুন্য। ধান ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে যেতে বসেছে। এখন বিদ্যুৎ চালিত পাম্প ও ডিজেল চালিত শ্যালো পাম্প পানি কৃষকদের ভরসা। আষাড়, শ্রাবণ মাসে সামান্য বৃষ্টি হলে এখন বৃষ্টি বিহীন দিনের কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। সেচ পাম্প মালিকরা জিম্মি করে ফেলেছে। বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা সেচ পাম্পের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ এর লোড শেডিং –এ বিদ্যুৎ সেচ পাম্পে বন্ধ রাখতে হচ্ছে। অনেকে ডিজেল চালিত সেচ পাম্পের উপর নির্ভর হয়ে পড়েছে। তবে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাতে উৎপাদন ব্যায়ও বেড়ে যাচ্ছে।
এ দিকে সেচ পাম্প মালিক ধান ক্ষেতে সেচ দিতে টাকা নয়, সেচের পরিবর্তে তারা উৎপাদিত ধানের ৪ ভাগের এক ভাগ ধান নিয়ে নেয়ার শর্তে কৃষককে পানি দিচ্ছে । তা ছাড়া তারা জমিতে সেচ দেবে না। কৃষকরা বাধ্য হয়ে ধানের চারভাগের এক ভাগ ধানসহ আঁটি দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে কৃষকদের লোকসান হচ্ছে বলে জানান জেলার গাবতলী উপজেলা সোন্ধাবাড়ি এলাকার রইচ উদ্দিন। সেখানে সনাতনী আমলের প্রথা চালু আছে। কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের কর্মকর্তারা বিষয়টি জানেন না বলে জানান।
কিন্তু সেখানকার কৃষকরা জানান, এই প্রথা অনেক আগে থেকে চালু আছে। কৃষকরা জানান, ১০০ আঁটি ধানের মধ্যে সেচ পাম্প মালিকদের দিতে হয় ২৫ আঁটি ধান। এই্ পদ্ধতিতে লাভ-লোকসান কৃষককের।
আমন মৌসুম সাধারণত: কৃষক বৃষ্টির পানির উপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু আষাঢ় শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে যে বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল এই বছর তার দেখা পায়নি কৃষক। কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় সেচে অধিক অর্থ ব্যায় করতে করতে হচ্ছে তাদের। অনেকে জমিতে পানি সেচ না দিতে পারায় রোদে জমি ফেটে চৌচিঁর হয়ে যাচ্ছে।
কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায় ,জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে প্রকৃতি বিরুপ আচরণ করছে।
গাবতলীর সোন্ধাবাড়ির কৃষক মজনু মিয়া জানান, আমন মৌসুমে বৃষ্টি হলে তাদের সেচের উপর নির্ভর করতে হতো না।
তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত তাকে ৪ বার সেচ দিতে হয়েছে। ডিজেল চালিত শ্যলো মেশিনে প্রতি বিঘা জন্য সেচে তাকে একবার ৪০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। তার উপর সেচ পাম্প মালিকদের ধানের উপর ভাগ বসাচ্ছে। এতে তাদের ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে। বৃষ্টি না হালে তাকে তার জমিতে আরো ৪ বার সেচ দিতে হবে। তা না হলে জমির প্রখর রোদে জমির মাটি ফেটে চৌচঁরি হয়ে যাবে। নষ্ট হবে জমির ধান। জমির ধানে শীষ না হওয়া পর্যন্ত সেচ চলবে। আর যদি আল্লাহ রহম করে এবং বৃিষ্ট হয় তা হলে সেচ খরচ কমে যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, এবার জেলায় ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে সড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন(চাল আকারে)। তিনি বলে বৃষ্টি নাহলে আমনে কৃষকের উৎপাদন ব্যায় বেড়ে যবে। এখন কাঙ্খিত বৃষ্টি জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া কোন উপায় নেই।
এনসিএন/এ
