ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৩:৪৯ পূর্বাহ্ণ

অবৈধ ধান চাল মজুদের অভিযোগে

এসিআইসহ ৭টি রাইস মিলে অভিযান; ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা 

নওগাঁয় ধান-চালের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য অভিযান চালানো হয়েছে।  

ধান চালের অবৈধ মজুদ, বস্তার গায়ে মিলগেট দর, ধানের জাত, মিলের নাম না লেখাসহ নানা অভিযোগের ভিত্তিতে জেলার বিভিন্ন চালকল এবং অটো রাইস মিলে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং জেলা খাদ্য বিভাগ। অভিযানে এসিআইসহ ৭টি চালকল এবং অটো রাইস মিলগুলো থেকে মোট ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

বুধবার (২ জুলাই) বেলা ১২ টা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত টানা সাড়ে ৪ ঘন্টা নওগাঁ সদর উপজেলার হাপানিয়া এবং মহাদেবপুর উপজেলার চৌমাশিয়া ও সরস্বতীপুর এলাকায় অবস্থিত চালকল এবং অটো রাইস মিল গুলোতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নওগাঁর সহকারী পরিচালক রুবেল আহমেদ এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার।

অভিযানে মহাদেবপুরের চকগৌরী এলাকায় অবস্থিত জিহাদ চাল কলকে অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদনের অভিযোগে ৬০ হাজার ও পণ্য বিক্রয় বা সরবরাহ না করার অভিযোগে ৪০ হাজার মোট এক লাখ টাকা, সরস্বতীপুর এলাকায় অবস্থিত এসিআই ফুডস লিমিটেড রাইস মিলে পণ্য বিক্রয় বা সরবরাহ না করার অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা, হাট চকগৌরী এলাকার লাইলি চাল কলকে অবৈধ ধান মজুদের অভিযোগে ১ লক্ষ টাকা, চৌমাশিয়া এলাকায় অবস্থিত রাকিব চাল কলকে পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করায় ৫০ হাজার, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদনের জন্য অভিয এক লাখ ও পণ্য বিক্রয় বা সরবরাহ না করায় ৫০ হাজার এই তিন অভিযোগে মোট দুই লাখ টাকা, হাট চকগৌরি এলাকায় অবস্থিত লাইলি চাউল কলকে পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করায় ৫০ হাজার ও পণ্য বিক্রয় বা সরবরাহ না করা অভিযোগে ৫০ হাজার মোট এক লাখ টাকা, মিলন ট্রেডার্সকে পণ্য বিক্রয় বা সরবরাহ না করার অভিযোগে ৫০ হাজার ও একই অভিযোগে কুলছুম চাউল কলকে ৫০ হাজার এবং সদর উপজেলার হাপানিয়া এলাকায় অবস্থিত টিকে এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করায় ৩০ হাজার ও পণ্য বিক্রয় বা সরবরাহ না করার অভিযোগে ৫০ হাজার মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

অভিযানের বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নওগাঁর সহকারী পরিচালক রুবেল আহমেদ বলেন, গত কয়েকদিন যাবত ধান এবং চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ধান এবং চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আমরা চালকল এবং অটো রাইস মিল গুলোতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। মিলগুলোতে খাদ্য আইন অমান্য করে অতিরিক্ত মজুদ, প্যাকেজিং এর সময় বস্তার গায়ে ধানের জাত, মিলগেইট মূল্য না লেখা এবং অতিরিক্ত মূল্য লেখার কারণে ৭টি মিলে মোট ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়েছে। সেই সাথে সকলে সতর্ক করা হয়। এছাড়া বর্তমানে সকল নিত্য পণ্যের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রয়েছে বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার বলেন, মিলগুলোতে বিভিন্ন অনিয়মের প্রমান পাওয়ায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে জরিমানা করা হয়েছে। খাদ্য আইনে সরাসরি ব্যবস্থা নিলে ৪ ধারায় তারা এতোক্ষণে জেলে থাকতেন। অবৈধ মজুদগুলো বাজারে দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমরা সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি। এরপরে যদি অবৈধ মজুদ পাওয়া যায় তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশাকরি অভিযানের মাধ্যমে ধান চালের দাম দ্রুত কমে আসবে।

অভিযানে উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করেন সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এছাড়া খাদ্য বিভাগ এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print