বগুড়ার ধুনট উপজেলার কৃতি সন্তান আব্দুল্লাহ আল নোমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)’র শেখ মুজিবুর রহমান হল সংসদ নির্বাচনে বহিরাঙ্গন ক্রীড়া সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এই উপজেলা থেকে তিনিই প্রথম ও একমাত্র ডাকসু’র হল সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করে নির্বাচিত হলেন। নোমান গোপালনগর ইউনিয়নের সাতটিকরী গ্রামের আশরাফুল আলমের ছেলে।
জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান শেখ মুজিবুর রহমান হল সংসদ নির্বাচনে ২ ভোটের ব্যাবধানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মির্জা মনির পেয়েছেন ৪৬১ আর আব্দুল্লাহ আল নোমান ৪৬৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ হিসাবে নোমানের বিজয়ে আমার অনেক ভালো লাগছে। এই জয় দল মত নির্বিশেষে ধুনটের সবার মনে খুশির জোয়ার বইয়ে দিবে বলে বিশ্বাস করি।
ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন অব ধুনট’এর সাবেক সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খোকন মাহমুদ বলেন, নোমান খুবই ভালো, ভদ্র, মিশুক একজন মানুষ। যেখানে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভরাডুবি হয়েছে। ঢাবি শিক্ষার্থীরা সেখানে নোমানকে ছাত্রদলের নেতা অথবা কর্মী হিসেবে ভোট দেয়নি। তাকে ভোট দিয়েছে তার সুন্দর ব্যক্তিত্বের কারণে। এজন্যই সে ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে। এ বিজয় আমাদের ধুনট উপজেলার সকলের। আশা করি সে ভবিষ্যতে আরও অনেক ভালো কিছু করবে। গতানুগতিক ধারার রাজনীতির বাইরে ক্লিন ইমেজটা ধরে রাখবে। ক্রীড়াঙ্গনে তার হাত ধরে ভালো কিছু হবে আশাকরি।
নোমান ধুনট উপজেলা থেকে ডাকসু নির্বাচনে নির্বাচিত প্রথম ব্যক্তি কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ১৯৯০ এর পর ২০১৯ সালে অর্থাৎ প্রায় ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। তখন ধুনটের কেউই ছাত্রলীগের হয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগের আমলে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও কেউ অংশগ্রহণ করেনি। এইবার ২০২৫ সালে দীর্ঘদিন পরে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনে নোমান একটা হলের ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে। আমার জানামতে ধুনটের ইতিহাসে পূর্বে কেউ-ই ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হয়নি। ছোট ভাই আব্দুল্লাহ আল নোমান ইতিহাস সৃষ্টি করলো। সে আমাদের ধুনটের গর্ব।
আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, আমি নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম ক্রীড়াঙ্গনের বিকাশ, সংস্কার ও উন্নয়নে সর্বদা পাশে থাকবো। এছাড়াও হলে সিট বাণিজ্য, গেস্টরুমের নামে ভয়ভীতি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিয়ন্ত্রণ- এসবই শিক্ষার্থীদের কাছে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি। এসব দখলদার রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করবো। আমি শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে সব সময় পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো।