ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ

নওগাঁর গ্রামীণ তিনটি রাস্তার বেহাল দশা; থমকে আছে সার্বিক উন্নয়ন

নওগাঁর চুনিয়াগাড়ি নামক একটি বৃহৎ গ্রামের তিনটি গ্রামীণ রাস্তার কিছু কিছু অংশের বেহাল দশা। সদর উপজেলার এই গ্রামে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি বড় মাদ্রাসা। অথচ ওই তিনটি রাস্তার কারণে থমকে আছে গ্রামটির সার্বিক উন্নয়ন। 

তাই দ্রুতই এই জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ তিনটি রাস্তার আধুনিকায়ণ করতে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার ৯নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের অর্ন্তভুক্ত চুনিয়াগাড়ি গ্রামটি কয়েকটি অংশে বিভক্ত। গ্রামের ছোট চুনিয়াগাড়ি থেকে বড় চুনিয়াগাড়ি যাওয়ার প্রায় ১কিলোমিটার পর্যন্ত মাটির রাস্তা দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে কোন মতে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে খানাখন্দক ভরে যায় বৃষ্টির পানিতে। তখন দেখে বোঝার উপায় থাকে না যে এটি রাস্তা নাকি ফসলের জমি। রাস্তার বেহাল দশার কারণে ছোট ছোট গ্রামীণ বাহন যেতে চায় না। ফলে এই গ্রামের কৃষক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণির মানুষদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যগুলো কম দামে বিক্রি করতে হয়। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলাচলের সময় রাস্তার গর্তের পানিতে পড়ে গিয়ে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের কাঁদায় লুটোপুটি খেতে হয়।

এছাড়া গ্রামের বটতলী থেকে বিশ্ববাঁধ পর্যন্ত আরেকটি আধা কিমি গ্রামীণ রাস্তার বেহাল দশা। এই রাস্তায় ইট বিছানো থাকলেও বহু বছর মেরামত কিংবা সংস্কার না করার কারণে রাস্তার কোথাও ইট উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

অপরদিকে চুনিয়াগাড়ি গ্রামের তালতলি থেকে বিশ্ববাঁধের প্রায় আধা কিমি গ্রামীণ রাস্তারও চরম বেহাল দশা। এই রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে বর্ষা মৌসুমের পুরো সময় ধরেই ভয়ে শিক্ষার্থীরা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই আসে না। এমন কি গ্রামের তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শিক্ষকরা এসে যোগদান করলে পরে গ্রামীণ রাস্তাগুলোর বেহাল দশার কারণে তারা অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হোন। কিন্তু গ্রামের বাসিন্দাদের অন্যত্র চলে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই তারা চরম দুর্ভোগকে সঙ্গি করে প্রতিনিয়তই কষ্টের মধ্যদিয়ে এই তিনটি গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন।

চুনিয়াগাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন ও ফায়জুল বারি জানান, পুরো চুনিয়াগাড়ি গ্রামে স্থায়ী ভাবে ৫হাজার মানুষের বসবাস। প্রত্যন্ত গ্রামগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করে পুরো দেশের আধুনিকায়ন করা কখনোই সম্ভব নয়। আগে গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করতে হবে তবেই দেশের চালিকা শক্তি কৃষকরা আধুনিক হবে।

গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষক আলমগীর বাবু জানান, গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার এমন বেহাল দশার কারণে প্রতিনিয়তই তারা উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছেন। ছেলে-মেয়েদের ভালো পরিবার থেকে বিয়ের সম্পর্ক আসে না। গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলাচলের রাস্তা খুবই খারাপ হওয়ার কারণে অভিভাবকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ফলে বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় প্রতিনিয়তই কমছে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা।

আরেক বাসিন্দা ময়েন উদ্দিন জানান, বিগত সরকারের সময় গ্রামের এই রাস্তাগুলোর বিন্দুমাত্র উন্নয়ন করা হয়নি। বছরের পর বছর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান্য-মেম্বার ও স্থানীয় নেতারা সরকারের বরাদ্দগুলো হরিলুট করেছে। তাই বৃহৎ এই গ্রামের জনগোষ্ঠির জীবনমানের কথা চিন্তা করে দ্রুত তিনটি গ্রামীণ রাস্তার উন্নয়ন করতে সরকারের একান্ত সুদৃষ্টি কামনা করছি।

দ্রুতই ওই গ্রামের রাস্তাগুলো পরিদর্শন করে আধুনিকায়নের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইবনুল আবেদীন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print