বগুড়ার শিবগঞ্জের বিএনপি ও ট্রাক শ্রমিক নেতা শহিদুলকে হত্যায় মূল আসামী আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াকুব আলী খাকে (৫৯) গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শিবগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
ইয়াকুব আলী উপজেলার কিচক ইউনিয়নের ৫নং আওয়ামী লীগের ওই ওয়ার্ডের সভাপতি। এছাড়াও ওই বাজারের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি। হত্যার ঘটনার পর আওয়ামী লীগ তাকে বহিষ্কার করেছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, উপজেলার কিচক বাজারে ট্রাক শ্রমিকদের টাকা পয়সার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্ব›দ্ব চলছিল। নিজেদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধির জন্য শহিদুলকে সরিয়ে তার স্থলে মুসলিম নামে আরেক ব্যক্তিকে বসাতে চেয়েছিলেন ইয়াকুব আলী খা ও আবু সাঈদ। এ কারণে শহিদুলকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরে যেতে বলা হয়। কিন্তু ওই পদ ছাড়তে রাজি হননি শহিদুল। এর জেরে তাকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এই হত্যাকাÐের নির্দেশদাতাই ছিলেন ইয়াকুব আলী। আর চাকু মারেন আওয়ামী লীগনেতা আবু সাঈদ।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াকুব এর সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়াও এর আগে মামলার আরেক আসামী আমিরুল ইসলাম গত ২৪ মার্চ আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, ইয়াকুব আলী খার হুকুমে আরেক আসামি আবু সাঈদ শহিদুলের পেটে চাকু মেরে খুন করেন।
আবু সাঈদ কিচক বাজার আন্তঃজেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এবং কিচক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বর্তমানে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আছেন। ঈদের দুই দিন পর জামিন শেষ হবে।
পরিদর্শক আব্দুল হান্নান বলেন, এ হত্যা মামলায় ইয়াকুব আলীকে নিয়ে এখন পর্যন্ত চারজন আসামী গ্রেপ্তার রয়েছে পুলিশ। ইয়াকুব আলীও ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। জামিন শেষে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রæয়ারি কিচক বাজারে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আন্তঃজেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় ২৬ ফেব্রæয়ারি নিহতের বড় ভাই আনিছুর রহমান বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় কিচক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ এবং ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি ইয়াকুব আলীসহ ১১জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় আরও চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
