ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ

বগুড়ায় প্রেমিককে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় প্রেমিকা গ্রেফতার

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

লাভলু ও ফরিদার আলাদা সংসার থাকলেও তারা জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়। তাদের গোপন সম্পর্ক জানজানি হওয়ায় ফরিদাকে ডিভোর্স দেন তার স্বামী মিনু বেপারি। পরে প্রেমিক লাভলুকে বিয়ে করেন ফরিদা। তবে বিয়ের ছয়দিন পরেই ফরিদাকে তালাক দেন লাভলু। ছাড়াছাড়ির পরেও নিয়মিত ঘনিষ্ঠ হতেন তারা। অবশেষে এই সম্পর্কের জেরেই লাভলুকে হতে হয় খুন।

ঘটনাটি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বৃষ্ণপুর গ্রামের। এই হত্যাকান্ডের ছয় বছর পর সেই ফরিদা বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে তিনি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ত থাকার বিষয় ও ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি। একই সঙ্গে হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যদের নাম প্রকাশও করেন ফরিদা। তার জবানবন্দি অনুযায়ী ৪০ বছরের আব্দুল গফুর নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
৪৫ বছর বয়সী ফরিদা বৃষ্ণপুর গ্রামের ফজর উদ্দিনের মেয়ে। তাকে গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গাজীপুরের জয়দেববপুর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আর গ্রেফতার হওয়া আব্দুল গফুর বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বামুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তাকে সোমবার রাতে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে, ২০১৬ সালের ১০ জুলাই রাতে লাভলু সরকারকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। বৃষ্ণপুর গ্রামের একটি মেহগনি বাগানে ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রলোভন দিয়ে তাকে ডেকে নেন ফরিদা। পরে সহযোগীদের নিয়ে হাত-পা চেপে ধরে শ্বাসরোধে লাভলুকে খুন করেন তিনি। পরদিন সকালে ওই বাগান থেকে লাভলুর লাশ উদ্ধার হয়।
হত্যাকান্ডের ঘটনায় একই বছরের ১৩ আগষ্ট নিহত লাভলুর স্ত্রী ৩০ বছরের নুর জাহান খাতুন শিবগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্ত শুরু করে পিবিআই। নিহত লাভলু বগুড়া সোনাতলা উপজেলার বামুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় গরু ব্যবসায়ী ছিলেন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১ টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান বগুড়া পিবিআই’র পুলিশ সুপার (এসপি) আকরামুল হোসেন।
পুলিশ সুপার জানান, লাভলুকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। ফরিদাকে নিহত লাভলু ডিভোর্স দিলেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তারা। ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরেও লাভলু ফরিদাকে বিভিন্নভাবে জিম্মি করে তার সঙ্গে নিয়মিত ঘনিষ্ঠ হতেন। সর্বশেষ ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রলোভনে লাভলুকে ডেকে এনে হত্যা করেন ফরিদা। এই হত্যাকান্ডের পর থেকেই ফরিদা নিজ গ্রাম ছেড়ে অন্যান্য জেলায় পলাতক ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে আব্দুল গফুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, আব্দুল গফুরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

 

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print