বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে বগুড়া জেলা শাখার উদ্দ্যোগে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টায় শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে তারা বলেন, দেশে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিকে গণবিরেধী ও স্বৈরাচারি সরকারের একতরফা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে বগুড়ায় আজকের এই বিক্ষোভ সমাবেশ।
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিয়ে তারা একটি মিছিল নিয়ে সরকারের একতরফা সিদ্ধান প্রত্যাহারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মুখে বটতলায় অবস্থান নেয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, বাম গণতান্ত্রিক জোটের বগুড়া জেলা শাখার সমন্বয়ক ও বাসদ বগুড়া জেলা শাখার আহ্বায়ক কমরেড অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু, সিপিবি বগুড়া জেলা সভাপতি কমরেড জিন্নাতুল ইসলাম জিন্নাহ্, সাধারন সম্পাদক কমরেড আমিনুল ফরিদ, বাসদ বগুড়া জেলা সদস্য সচিব কমরেড অ্যাড. দিলরুবা নূরী, বাসদ বগুড়া জেলা শাখার সাবেক সদস্য সচিব ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সভাপতি কমরেড সাইফুজ্জামান টুটুল, বাসদ বগুড়া সদর উপজেলা সভাপতি কমরেড মাসুদ পারভেজ।
সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বগুড়া জেলা শাখার সমন্বয়ক ও বাসদ বগুড়া জেলা শাখার আহ্বায়ক কমরেড অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সিপিবি বগুড়া জেলা সভাপতি কমরেড জিন্নাতুল ইসলাম জিন্নাহ্ বলেন, বিশ্ববাজারে যখন তেলের দাম নিম্নমুখী সে সময়ে সরকারের এই সিদ্ধান্ত জনগণের উপর মূল্যবৃদ্ধির বোঝা আরও বাড়বে। শিল্প, কৃষি, পরিবহন থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রেই জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়বে। এতে জনজীবনে চরম দুর্দশা নেমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বরা হচ্ছে, গত ছয় মাসে বিপিসি জ্বালানি তেল বিক্রি করে ৮ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। কিন্তু বিগত সময়ে বিশ্ববাজারে যখন তেলের দাম কম ছিল সে সময়ে তেল বিক্রি করে সরকার ৪৭ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। তা দিয়েই এই ঘাটতি পূরণ করা যেত। অথচ সরকার সে পথে না হেটে জনগণের উপর মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপিয়ে দিল।
কমরেড অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সঙ্গে দামের সামঞ্জস্য রাখার কথা বলে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রল এর দাম বাড়ানো হলো অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে আমাদের দেশে দাম কমে না। এই সরকার গত ২০২১ সালে নভেম্বর মাসের ডিজেল লিটার প্রতি ১৫ টাকা, গত জুল মাসে গ্যাসের দাম এবং এ মাসে ইউরিয়া সারের কেজি প্রতি ৬ টাকা বৃদ্ধি করেছে। এইবার তারা বিইআরসির গণশুনানী না করিয়ে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রল এর দাম বাড়ালো।
তিনি আরও বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ইতিমধ্যে বাজারে সকল জিনিস-পত্রের দাম বেড়ে গেছে, বাস ভাড়া বেড়ে গেছে কিন্তু মানুষের আয় বাড়েনি। এই পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন মান নিম্নগামী হতে বাধ্য। তাই তিনি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রতিহত করার আহ্বান জানান।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম ইতোমধ্যে পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও উচ্চপর্যায়ে আছে। এমন পরিস্থিতিতে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রল এর দাম বৃদ্ধিতে নিম্নআয়ের মানুষের জীবন-যাপন দর্বিসহ হয়ে পড়বে। স্বাভাবিক ভাবে পরিবহনসহ সকল ক্ষেত্রে এই দমি বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে। তাই সরকারকে তার এই অগণতান্ত্রিকজনবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে গণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের এই অগণতান্ত্রিক-জনবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য করবে।
এনসিএন/বিআর
