বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিরোধী দলের ওপর দীর্ঘ বছর ধরে জুলুম, নির্যাতন, গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডসহ সকল অপরাধে আল্লাহর পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার পতন ঘটে। বিচারেও প্রমাণিত হয়েছে, আল্লাহ পৃথিবীতেই বিচার করেন।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে বগুড়ায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত দিনব্যাপী সেবামূলক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন আমরা বিএনপি পরিবার আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শহরের শহীদ খোকন পার্কে বেলুন ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়।
বিএনপি’র এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, আমরা কখনো বেগম খালেদা জিয়ার চোখে পানি দেখি নি। যেদিন শেখ হাসিনা তাকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন, সেদিন আপোষহীন এই নেত্রীর চোখে আমরা পানি দেখেছি। অন্যায়ভাবে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য কড়ায় তিনি বলেছিলেন, তাদের ওপর গজব পড়বে। শেখ হাসিনা এখন নিজেই সেই গজব দেখতে পাচ্ছেন।
রিজভী বলেন, যারা মনে করেছিলো বিরোধী দলের লোকজনকে খুন করে গুম করে চিরদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়, তারা এখন নিজেদের চোখেই নিজেদের পতন দেখছে। আর পতনের সময়ই এইরকম শাসকেরা নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে সাথে নিয়ে দল আর নেতাকর্মী সমর্থকদের দেশে ফেলে পালিয়ে যায়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মানবতার হাইকমিশনার উল্লেখ করে রাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, হাজার মাইল দূরে থেকেও বিগত দেড় দশক ধরে তারেক রহমান সারাদেশে মানবিক কাজ করে গেছেন গোপনে। তার অংশ হিসেবে এবার তিনি আগেই কড়া বার্তা দিয়েছেন, মানবিক কর্মসূচি ছাড়া তার জন্মদিনকে ঘিরে আড়ম্বরভাবে বা হইচই করে কোনো উদযাপন না করার জন্য।
তিনি বলেন, বিনাভোটে শাসন ও বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। যারা নিজের দেশের সঙ্গে বেঈমানি করে, জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করে, তাদের পরিণতি সর্বদাই ভয়াবহ হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দিনের ভোট রাতে করার জন্য ৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছিল হাসিনা। সেই টাকার ভাগ পেয়েছিল তার পালিত পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। রাষ্ট্র যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর লুটপাটের স্থানে পরিণত হয়, সেই রাজনৈতিক দল লুটেরা, ডাকাত, দানব ও রাক্ষসের হাতে জনগণের কোনো উপকার হবে না।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, বাংলাদেশে তারেক রহমান মানবতার হাইকমিশনার ও দূত হয়ে কাজ করছেন। তিনি ব্যক্তিগত অনুসন্ধানের মাধ্যমে সারাদেশের অসহায়, নির্যাতিত, নিপীড়িত, অভাবী ও মেধাবীদের খুঁজে বের করেন। তারপর তাদেরকে নিয়মিত সহযোগিতা করেন।
এদিন শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, কৃষকের মাঝে উপকরণ বিতরণ, শ্রমিকদের মাঝে পোশাক, হৃদরোগীর বিশেষ স্বাস্থ্য সেবা, বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প, প্রতিবন্ধী শিশু ও চলাচলে অক্ষম ব্যক্তিদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এড. একেএম মাহবুবর রহমান, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, কেন্দ্রীয় সদস্য ভিপি সাইফুল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন চাঁন, আলী আজগর হেনা, বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন, ডা. মনোয়ারুল কাদির বিটু, এম আর ইসলাম স্বাধীন, হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, মাফতুন আহমেদ খান রুবেল, তাহা উদ্দিন নাহিন, সহিদুন্নবী সালাম, সাইদুজ্জামান শাকিল, বগুড়া প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক কালাম আজাদ, আমরা বিএনপি পরিবারের কৃষিবিদ মোখছেদুল মমিন মিথুন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, রাশেদুজ্জামান পিয়াস, সরকার মুকুল, রাকিবুল ইসলাম শুভ, আবু হাসান, হাবিবুর রশিদ সন্ধান, নাজমা আক্তার, স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
