ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ

বিদেশে চাকরির নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ, শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

বিদেশে চাকরির নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ, শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
বিদেশে চাকরির নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ, শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: এনসিএন

বিদেশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতি চক্রের সদস্য রফিকুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। একই সাথে তার স্ত্রী স্বপ্না বেগমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।

আজ সোমবার (২৩ মে) বগুড়া শহরের সাতমাথায় সকাল ১১টায় মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত চক্রের সকল সদস্যদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো।

জানা যায়, রফিকুল বৈধ ভিসায় সৌদিতে চাকরি দেয়ার কথা বলে সদর উপজেলার গোকুল এলাকার অসংখ্য মানুষের কাছে থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পাঠালেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের চাকরি দিতে পারেনি। বরং যারা গেছেন তাদের কেউ হয়রানি হয়ে, অমানবিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে দেশে ফিরে এসেছেন। অবৈধ ভিসা হওয়ায় অনেকেই আবার দেশটিতে পালিয়ে জীবনযাপন করছেন।

রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা মিলে একটি প্রতারণা চক্র গড়ে তুলে। পরে আনরুল ট্রাভেলস, সাত্তার ওভারসিজ এন্ড বিজনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, নামিরা ওভারসিজ নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতারণা করে আসছিলেন। সম্প্রতি রফিকুল ইসলাম মাজিস্ট্রেট আদালতের একটি মামলায় জেল হাজতে আছেন। তবে স্বামীর গ্রেফতারের পর থেকে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি প্রদান করে আসছেন তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম।

এদিকে গোকুলের ভুক্তভোগীর মেয়ের জামাই শাহনেওয়াজ শাওন বলেন, ‘তার শশুর সাইফুল ইসলামকে ৪ লাখ টাকায় সৌদিতে পাঠিয়েছেন। সেখানে তাকে পেট্রল পাম্পে নজেলম্যানের চাকরি দেয়ার কথা থাকলেও অবৈধ ভিসার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এমনকি বর্তমানে তিনি কি অবস্থায় আছেন সেটাও জানেন না তার পরিবার।’

আরেক ভুক্তভোগী শাপলা বেগম বলেন, রফিকুল আমার স্বামীকে বিদেশে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে সৌদিতে পাঠায়। এতে আমার স্বামী জায়গা জমি বিক্রি ও ঋণ নিয়ে তাকে ৫ লাখ টাকা দেয়। তবে ৩ মাস হলে বিদেশে গেলেও তার কাজের সন্ধান হয়নি। এরই মধ্যে তাদের কাছে থেকে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেছেন প্রতারক রফিকুলের স্ত্রী স্বপ্না বেগম। টাকা দিতে না চাওয়ায় বিভিন্নভাবে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন এই ভুক্তভোগী।

একই এলাকার রঞ্জনা বেগম বলেন, তার স্বামী সোনা মিয়া। রফিকুলের প্রতিশ্রুতিতে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ করে তাকে সৌদিতে পাঠিয়েছেন। কিন্তু ৭ মাস পার হলেও তাকে এখনো কাজ দিতে পারেনি ওই চক্রটি। অবৈধ ভিসার কারণে এখন তার স্বামীকে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে বলেও জানান রঞ্জনা।

এদিন মানবন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বগুড়া জেলার আহ্বায়ক অ‌্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু। তিনি বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত মানব পাচারকারী দলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত সরকারের দূরদৃষ্টির অভাবেই তারা হাজারো পরিবারকে নিঃস্ব করতে সক্ষম হচ্ছে। এসব মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় এনে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এই নেতা।

এনসিএন/এআইএ

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print